১৫ সেপ্টেম্বর, শেষরাত থেকে শুরু হয়ে অবশেষে আগুনের সঙ্গে লড়াই শেষ হল। আজ, ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটায় দমকল বাহিনী জানিয়েছে, বাগড়ি মার্কেট এখন আগুনমুক্ত।
তবে আশেপাশে এখনও প্রবল ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ছ’তলা বাড়িটির কোথাও এখন আর আগুন জ্বলছে না। পুড়ে খাক হয়ে গেছে বাড়ির বেশিরভাগটাই। বিভিন্ন অংশ থেকে গত দুদিন ধরেই ছাদ দেয়াল ও সিঁড়ির নানা অংশে আস্তর খসে পড়ছে। বাড়িটির কাঠামো টিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে প্রকাশ করেছে দমকল কর্মীরা।
এদিকে, ১৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগার প্রায় ৬২ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা দেয় দমকল। সেখানে ডিভিশনাল অফিসার দীপঙ্কর পাঠক বাগড়ি মার্কেটের দুই মালিক রাধা বাগড়ি, তাঁর ছেলে বরুণরাজ বাগড়ি এবং বাগড়ি এস্টেটের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার কৃষ্ণকুমার কোঠারির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন। দমকল বাহিনীর দাবি, আগুন নেভানোর ব্যবস্থায় ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘাটতি রেখেছিলেন মালিকেরা। তাদের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর ষড়যন্ত্র, ধ্বংসের জন্য দাহ্য পদার্থ বা বিস্ফোরক রাখা, রক্ষণাবেক্ষণ না করা-সহ দমকল আইনের একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। বাড়িটির বিরাট জলাধার কেন জলশূন্য ছিল, এবং পাম্প কেন অকেজো ছিল তার উত্তর মেলেনি। আসামীরা সবাই পলাতক রয়েছে। ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, দেরিতে এফআইআর করে এদের পালানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া, নানা পুরনো প্রশ্ন নতুন করে মাথা চাড়া দিয়েছে এই অগ্নিকান্ডকে ঘিরে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশে বসে বলেছেন ব্যবসায়ীরা ‘গুন্ডা’, তাদের দোষে আগুন লেগেছে। অথচ মার্কেটের ট্রেড লাইসেন্স ও দমকলের ছাড়পত্র মাত্র ৪৮ দিন আগে কর্পোরেশন নবীকরণ করেছে, অগ্নিনির্বাপণের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকা সত্তেও। কিভাবে কাদের প্রভাবে সেটা করা হল এটা সব মহলের প্রশ্ন। সরকারের পূর্ত বিভাগ ও কর্পোরেশন এই দায়িত্ব এড়াতে পারে না।
উল্লেখ্য, বাগড়ি মার্কেট পূর্ব ভারতে ওষুধের ডিস্ট্রিবিউশনের সবচেয়ে বড় মার্কেট, আশংকা আনুমানিক 90 কোটি টাকার ওষুধ ধ্বংস হয়েছে। আগামীদিনে ঔষধের ব্যবসায় এর প্রভাব কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে, এই চিন্তা ঔষধবিক্রেতা ও ক্রেতাসাধারণের।
বাঙালীয়ানা/এসসি/জেএইচ