আগুনের ভয়াবহতা বাড়িয়েছে কেমিক্যাল

Comments
শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, সকালে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে এসে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে.কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান বলেন, “চকবাজারের ওয়াহিদ ম্যানশনে অবশ্যই কেমিক্যাল ছিল”।
তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যের সংগে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে এসে তিনি বলেন, “ভবনের ভেতরে গ্যাস লাইটার রিফিলের পদার্থ ছিলো। এটা নিজেই একটা দাহ্য পদার্থ। এছাড়া আরও অন্যান্য কেমিক্যাল ছিল। প্রত্যেকটা জিনিসই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছে। পারফিউমের বোতলে রিফিল করা হতো এখানে। সেই বোতলগুলো ব্লাস্ট হয়ে বোমের মতো কাজ করেছে। এগুলো আগুনকে ট্রিগার করেছে। যার কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। কেমিক্যালের কারণেই এভাবে ছড়িয়েছে। না হলে কখনোই আগুনে এভাবে ছড়ায় না”। তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখেছি এখানে যে জিনিসগুলো আছে সেগুলো অবশ্যই কেমিক্যাল। ওয়াহিদ ম্যানশনে কেমিক্যাল ছিল না-শিল্পমন্ত্রী কথাটা কোন আঙ্গিকে বলেছেন এটা আমার জানা নেই”।
কমিটির আরেক সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর কৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেছেন, “আমরা বিভিন্ন ভবন পরিদর্শনকালে দেখেছি ৫টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওয়াহিদ ম্যানশনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার কলাম এবং বিমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ভবনটা ব্যবহার করা যাবে কিনা তা আগামী সাত দিনের মধ্যে বিস্তারিত বলা যাবে। এছাড়া অন্যান্য ভবনগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য যে শক্তি দরকার তা আছে বলে আমরা মনে করি। আমরা ঘুরে দেখলাম ওয়াহিদ ম্যানশন একটি অনেক বড় বিল্ডিং এটি কমপক্ষে ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মিত। এ ধরনের ভবনের মধ্যে মাত্র একটি সিঁড়ি, যা পর্যাপ্ত না। ভবনের দ্বিতীয় তলাটা পুরোটাই গুদাম ছিল। ওই ভবনে আগুন নির্বাপণের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না”।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, “কয়েক দিন আগেও সিটি করপোরেশনের মেয়র এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেছেন তারা যাতে এই কেমিক্যাল সরিয়ে নেন। এখানে কিন্তু কোনও কেমিক্যালের লাইসেন্স দেওয়া হয়নি এবং কোনও লাইসেন্স রিনিউ করা হয়নি। এগুলোর জন্য আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন আগুন লেগেছে এবং কারা কারা এই ঘটনার জন্য দায়ী কমিটি সে বিষয়ে তদন্ত করবে”।

উল্লেখ্য, ঢাকার পাইকারি পণ্যের বাজার চকবাজারের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের কাছে বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিকট বিস্ফোরণের পর প্রথমে রাস্তায় থাকা যানবাহনগুলোতে আগুন ধরে যায়, এরপর সেই আগুন গ্রাস করে আশপাশের পাঁচটি ভবন। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টার চেষ্টায় সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, কিন্তু ততক্ষণে চুড়িহাট্টা মোড় পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে। এই ঘটনায় সরকারী হিসেব মতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬৭ জনের আর আহত অর্ধশতাধিক। এখনও নিখোঁজ অনেকে।

বাঙালীয়ানা/এসএল

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.