পায়ের খোঁজে
তারপর আসি
আবাসনে শবাসনে
এরকম কতকাল
কাটবে কোদাল
চালিয়ে চিন্তার
খুঁড়ে পাবো এন্তার
চন্দ্রহীনতা দিনহীনতা
কিসের ভেতরে ঢুকেছি
আর বেরুতে চাইলে
দিকভ্রান্ত হই বারাবার
তখন পা উল্টে গিয়ে
আকাশে ঠেকেছে
মাথাটা দড়াম করে
পড়লো উৎরানো চিন্তায়
রান্না হচ্ছিলো তোমার
ঘিলুখানা; যেনো সে
সত্যি-ই কোনো খানা
তুমি বাষ্প হয়ে যাও যে
উড়ে পায়ের খোঁজে রে
৩০/০৯/২০২২

বিড়ালিনী
পুরোপুরি মানুষের অবয়ব নিয়ে
আবার আসবো ফিরে এই গ্রীনরোডে
বিড়ালের অবয়ব পেলে আরো ভালো
শীতে জমে যাওয়া পাড়ার দেয়ালগুলি
লেজের উষ্ণতা দিয়ে করবো গরম
তখন দেয়াল আর থাকবে না জানি,
থাকবে বিরাট এক সসার স্টেশন,
সেখানে আমার আত্মা খুঁজতে থাকবে
ইটের টুকরাগুলি আতিপাতি ক’রে;
আমি তো বিড়াল আর তুলতুলে শিশু
আমার ভেতরে দুটো প্রাণ আছে, যিশু
দেয়াল দেয়াল ক’রে প্রাণপাত হবে
আর স্টেশনের লোহার মানুষগুলি
এতোসব ঘ্যানঘ্যান শুনে রেগে গিয়ে
আমার আত্মাকে টিনের কোটায় ভরে
রেখে দিবে বন্দি ক’রে যুগ যুগ ধরে;
জগদ্দল লোহার পৃথিবী ভেদ ক’রে
কোনো একদিন ভেঙে বের হয়ে যাবো
লেজের আঘাতে হুড়মুড় করে ভেঙে
পড়বে লোহায় বিড়ম্বিত পথঘাট
আরো আরো আমার বন্ধুরা যারা ছিলো
অন্তরীণ অনেক লোহার কপাটের
নিচে হাড়গোড়সহ, তারা একে একে
জেগে গিয়ে জমায়েত হবে গ্রীনরোডে
তারাই আমার গ্রীনরোড আর আমি
দেয়ালের কোলে বসে থাকা বিড়ালিনী
১০/১২/২০১৯

বিবাহ
একটা বউ আমি
পেয়েছি বহু আগে
আমাকে পেয়েছে কি
সে বউ তারো আগে?
হয়তো কুয়াশায়
যখন হেঁটে গেছি
চিনিনি নিজেদের
ধোঁয়ায় মিলিয়েছি
দু’জন দুইদিকে
কে কাকে বলেছিলো
চিনেছি আপনাকে?
আপনি একদিন
আমার বর হয়ে
শোবেন বিছানায়
আমরা জড়াজড়ি
করবো রাতভর
কাঁপবে নীলাকাশ
ভীষণ থরথর
না না তা নয় ঠিক
আপনি সেই মেয়ে
ছিলেন আদিকালে
আমার সঙ্গীনি
আমরা কাটিয়েছি
পাতার বিছানায়
অনেক ঝড়ো রাত
আমরা বিবাহিত
অনেক আগেকার
সেদিন আপনাকে
চিনেছি চুল দেখে
এখনো আপনার
চুলটা কোঁকড়ানো
হাজার বছরের
বিবাহ আমাদের
৩০/১০/২০১৯

গোসল করবো
গোসল করবো তুমি আমি
জামা, প্যান্ট, জুতা, চশমা
তোমরা আমাদের ছাড়ো,
বোতাম আর ব্রা, ইলাস্টিকের
কামড় তোমরা ছাড়ো আমাদের
তুমি-আমি গোসল করবো
গোসল, তোমাকে একটা
আকার দিতে চাই, তোমাকে
বন্ধু করতে চাই, তুমি পাইপে
আছো পানির আদলে,
কবে আসবে হিসহিস করে,
একটা ছোবলের জন্য
অপেক্ষমাণ শরীরের জ্বর
নগ্ন হবো, বজলু ভাই,
পানির কলটা ঠিক করে দেন,
প্লিজ, পানির বীর্য জমা হয়ে
আছে পাইপগুলিতে, ওরা সব
উত্তেজিত, ওদের রতিক্রিয়ার
বন্দোবস্ত হোক, ওদের সাজাও
সিসার যৌবনে, লোহার পৌরুষে,
পানির কামিনীরা খিলখিল
করতে করতে ছুটে আসছে
ওগো গোসল, ওগো শান্তির
স্নান, আমাদের গর্ভে তোমাকে
ওম দিবো, পাইপটাকে
লাইগেশন ভেসেক্টমী করাবেন
না প্লিজ, পৃথিবীর তাবৎ পাইপ,
সজাগ থাকো, পাইপগুলিকে
জন্মনিরোধক পিল খাওবেন না
ছাড়ো, কল-সকল, চিকন, মোটা,
লম্বা, আঁকাবাঁকা, মাইল মাইল
সরিসৃপ পাইপ সব রেডি থাকো,
বজলু ভাই, পাইপের থ্রেডগুলি
টাইট দেন, ওই শাদা ফকফকা
টেপগুলি নিয়ে আসেন, জংধরা
পাইপগুলিকে তিতা করলা খাওয়ান,
বছরের সব বর্জ্যগুলি ওরা
বমি করে উগড়ে দিক
ঘুরিয়ে দেন ঘড়ির কাঁটা বরাবর
সব চাবি, স্টার্ট দেন পানির মেশিন
বাড়িতে অফিসে, পাকঘরের
গোসলখানার, বেসিনের সব
কলগুলি একসাথে ছাড়ো, ছাড়ো
গোসল করবো গোসল করবো
০৭/০৮/২০১৭

আমার পৌরুষ
পারি না টপকিয়ে
আমার পৌরুষ
তোমার কাছে যেতে
কোথায় রেখে যাবো
যেগুলো শারীরিক
যেগুলো চুল্লীর
আগুন হয়ে শুধু
কাপড় পুড়ে যায়
অঙ্গ কেটে ফেলে
চোখটা খুলে এসে
এবার যদি আমি
তোমার কাছে আসি
তেমনই জড়বৎ
পুরুষ চেয়েছিলে?
একটা কাঠামোর
পুরুষ যার আছে
গজানো মোচ আর
শক্ত চোয়ালের
প্রকট মুখখানা
তেমন পুরষের
অনেক জৈবিক
রোমশ কথা আছে
পারি না আটকাতে
সুপ্ত কামুকতা
পারি না উপড়াতে
এ রিরংসাকে
রাষ্ট্র করে দেবো
আমার প্রবণতা
যেগুলো অসুখের
যেগুলো কামুকের
বেরয় কৃত্রিম
পোশাক ফেড়েফুঁড়ে
আমার পৌরুষ
মরছে মাথা খুঁড়ে
০২/০২/২০২১

লেখক:
আহমেদ নকীব, কবি