কিউবা ‘সাম্যবাদ’ এর পথেই থাকছে!

Comments

কিউবার নতুন সংবিধান রচনার প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে বাদ দেয়া “সাম্যবাদ” ফের সংযোজিত হয়েছে। চূড়ান্ত খসড়ায় সাম্যবাদী সমাজ গড়ার প্রত্যয়কে আবার যুক্ত করা হয়েছে। খসড়াটি শনিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮ নীতিনির্ধারকদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পার্লামেন্টে চূড়ান্ত ভাবে অনুমোদিত হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, খসড়া সংবিধানের প্রথম সংস্করণে সাম্যবাদের নীতি সরিয়ে দেওয়ার কারণে দেশটির অনেকেই প্রবল উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। ফলে সাম্যবাদের ধারাটি ফিরিয়ে আনতে হয়: কিউবার লক্ষ্য হবে একটি ‘সাম্যবাদী সমাজের দিকে অগ্রসর হওয়া।’ 

রয়টার্স আরও জানায় যে দেশটিতে ক্ষুদ্র আকারে গড়ে ওঠা বেসরকারী বাণিজ্য, বৈদেশিক বিনিয়োগ, সীমিত আকারে সম্পদের ব্যক্তিমালিকানা ইত্যাদি বিষয়কে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে সংশোধনীতে। রাষ্ট্রপ্রধান পদে এক ব্যক্তি কতবার নির্বাচিত হবেন এবং তার বয়স সীমাও বেঁধে দেয়া হয়েছে সংশোধনীতে। এছাড়া সমকামী বিয়ের বিষয়ে পূর্বে সংবিধানে যে প্রত্যক্ষ অনুমোদন দেয়া হয়েছিল অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল তা সামান্য পরিবর্তন করা হলেও সমকামী বিয়ের অধিকার বলবৎ রয়েছে। তবে বলা হয়েছে এ বিষয়ে “ফ্যামিলি কোড” এ বিস্তারিত উল্লেখ করা হবে। আগামী ২ বছরের মধ্যে নতুন “ফ্যামিলি কোড” বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।

Raul Castro_01

চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদনকালে পার্লামেন্টে রাউল ক্যাষ্ট্রো

কিউবা বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের একটি যারা এখনও কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত। কিউবাতে সোভিয়েত আমলের যে সংবিধান কার্যকর ছিল তার বদলে নতুন সংবিধান বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে কয়েক বছর ধরেই। এ সপ্তাহে খসড়া সংবিধানের সর্বশেষ সংস্করণের ওপর সংসদে বিতর্ক সম্পন্ন হলো এবার সংসদ অনুমোদিত এ খসড়াটির উপর আগামী ফেব্রুয়ারীতে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। তারপর তা নতুন সংবিধান হিসেবে গৃহিত হবে।

যে কমিশন নতুন সংবিধান রচনার দায়িত্ব পালন করছে তার প্রধান কিউবান কমিউনিষ্ট পার্টি প্রধান রাউল ক্যাষ্ট্রো। তার সিদ্ধান্তে গত জুন মাসে তা জনগণের মতামতের জন্য প্রকাশ করার পূর্বে খসড়া সংবিধানের প্রথম সংস্করণ থেকে সাম্যবাদের ধারা সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন দলেরই অনেক সদস্য সাম্যবাদের ধারা ফিরিয়ে আনার দাবি তোলেন। তাদের দাবির মুখে খসড়া সংবিধানের আবার ধারাটি যুক্ত করা হয়। তাদের কারও কারও মতে, ‘প্রকৃত বিপ্লবী সে, যে বাধা ডিঙ্গিয়ে সামনের দিকে যেত চায়। আর তার জন্যই অনুপ্রেরণা হিসেবে সাম্যবাদের প্রসঙ্গ থাকা দরকার।’

রয়টার্স জানায়, সরকার চেয়েছিল নতুন সংবিধান রচনাকে যতটা সম্ভব অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে। নতুন সংবিধানের খসড়ায় ৭৬০টি পরিবর্তন বাস্তবায়ন করা হয়েছে! সাম্যবাদী সমাজ গড়ার ধারাটিকে ফিরিয়ে আনা এগুলোরই একটি। পুরাতন সংবিধানের সঙ্গে নতুন সংবিধানের বেশ কিছু গুণগত পরিবর্তন দেখা গেছে।

বাঙালীয়ানা/এসএল

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.