বাঙালীয়ানার তথ্যানুসন্ধানে কথিত বিমান ছিনতাইকারী মাহবি জাহানের পরিচয় সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, দুপুরে বাঙালীয়ানার তথ্যানুসন্ধান দলের নজরে আসা Mahibi Jahan নামের ফেসবুক আইডি থেকে জানা যায় বিভিন্ন তথ্য। উল্লেখ্য তার বাবার নাম পিয়ার জাহান।
ফেসবুক আইডিতে মাহাবি জাহানের ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭-তে পোষ্ট করা একটি ছবিতে এবং কয়েকটি ছবিতে তার হাতে একটি পিস্তল দেখা যায় এবং সেই ছবির ক্যাপশন ছিল “Tera ishk me sath diya… mera hal keya kar diya……….” অর্থাৎ “তোমার প্রেমে সংগে আছি …. কিন্তু আমার কি অবস্থা করলে তুমি….”।
মাহাবি তার ফেসবুক আইডিতে উল্লেখ করেছে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিব্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট হিসেবে। শুধু তাই নয় নিজেকে বৃটিশ এয়ারওয়েজের একজন ষ্টাফ উল্লেখ করেছে। বাসিন্দা হিসেবে উল্লেখ করেছে গ্লাসগো, যুক্তরাজ্যের নাম। অথচ তার বাবা পিয়ার জাহান বলেছেন, ‘পলাশ সোনারগাঁয়ের তাহেরপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়। এরপর সে আর পড়াশোনা করেনি।’
-
IT Business Analyst (Information Technology Business Analyst) at British AirwaysJanuary 19, 2015 to present
-
Class of 2014
-
Lives in Glasgow, United KingdomFrom Dhaka, Bangladesh
-
No relationship info to show
মাহাবির ফেসবুকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সিমলার সাথে রয়েছে অসংখ্য ঘনিষ্ট ছবি যেখানে তাকে নিজের “বউ” হিসেবে সম্বোধন করেছে। এ প্রসঙ্গে পলাশের (মাহাদী) বাবা বলেন, ‘গত ১০ মাস আগে চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে পলাশ বাসায় আসে। তখন সে জানায় সিমলাকে নিয়ে এলাকায় বেড়াতে এসেছে। কিন্তু দেড় থেকে দুই মাস পর লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি তাদের বিয়ে হয়েছে। এর ঠিক দেড় থেকে দুই মাস পরে পলাশ আবারও সিমলাকে নিয়ে বাড়ি আসে। তখন জানায় সিমলাকে সে বিয়ে করেছে। প্রথমে না মানলেও পরবর্তীতে বিয়ে মেনে নেই এবং বউকে (সিমলা) বলি ছেলেকে ভালো করে তুলতে। এরপর পলাশের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ হতো না।’
তবে সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, সন্ধ্যায় অভিনেত্রী শামসুন্নাহার সিমলা এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন যে ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ প্রোডিউসার হিসেবে পরিচয়ের পর ৩ মার্চ, ২০১৮-তে পলাশকে বিয়ে করেন এবং চার মাস আগে ৬ নভেম্বর, ২০১৮-তে তাদের তালাক হয়ে যায়।
পিয়ার জাহান বলেন, ‘এর আগে পলাশ আরেকটি বিয়ে করে বগুড়ায়। তার একটি বাচ্চাও আছে। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এছাড়া, এলাকায় নারী কেলেঙ্কারির একটি ঘটনায় মামলাও হয়েছিল পলাশের নামে। সেই মামলায় ২০ দিন জেল খেটে সে জামিন পেয়েছিল। ’
মাহাবি জাহানের ফেসবুকে তার অজস্র ছবি পাওয়া যায়। সেসব ছবিতে তাকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, সাইপ্রাস, মঙ্গোলিয়াতেও দেখা গেছে। তার বিভিন্ন ছবিতে তার অবস্থান বেশ বিলাসবহুল হোটেল কক্ষে বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু তার পিতা পিয়ার জাহানের দাবি, ‘পলাশ তাদের অবাধ্য সন্তান। এর আগেও বিদেশে যাওয়ার কথা বলে সে অনেক টাকা নষ্ট করেছে। যে কারণে ছেলের সঙ্গে তিনি ঠিকমতো কথা বলতেন না। উল্লেখ্যযোগ্য যে পিয়ার জাহান বিদেশে কিছুদিন চাকরী করবার পর দেশে ফিরে বর্তমানে একটি মুদী দোকান চালিয়ে সংসার পালন করছেন।
পিয়ার জাহান আরও বলেন, ‘গত শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ছেলে (পলাশ) আমাকে জানায় সে আর বাংলাদেশে থাকবে না। দুবাই চলে যাবে। এ কারণে সে আমার কাছে ৫০০ দিরহাম দাবি করে এয়ারপোর্টে দেখানোর জন্য। আমি সেই টাকা জোগাড় করে দেই।’
তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে পলাশ ছোট। একমাত্র ছেলে হওয়ায় যা চাইতো তাই দেওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু ছোটবেলা থেকে পলাশ অবাধ্য সন্তান ছিল বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার বাবা।
এযাবৎ তার তিনটি নাম প্রকাশ করেছে আইনশৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী। মাহাবি, মাহমুদ পলাশ, মো: পলাশ আহমেদ, নাম তিনটি সামরিক বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকেই পাওয়া গেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
বাঙালীয়ানা/এসএল