গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ধানের ন্যায্যমূল্যের দাবীতে মানববন্ধন করায় ১৪ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৯, এক নোটিসে শিক্ষার্থীরা কেনো ‘সরকার ও প্রশাসন বিরোধী’ বক্তব্য দিয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ধানের ন্যায্যমূল্যের দাবীতে মানববন্ধনে দাঁড়ানোর কারণে এমন নোটিস দেওয়া হয়েছে। তারা জানায়, এর আগেও যৌন হয়রানির প্রতিকার চেয়ে প্রতিবাদ করায় এমন নোটিস প্রদান করেছিলো অশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তবে, প্রশাসন বলছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে সরকারের বিপক্ষে কথা বলা, উস্কানী দেওয়া এবং প্ল্যাকার্ড-ফ্যাস্টুন বহন করা সরকার বিরোধী কাজ।
নোটিসে জানানো হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করার অভিপ্রায়ে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া সরকার ও প্রশাসনবিরোধী প্ল্যাকার্ড ফেস্টুন বহন ও উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান এবং অত্যুৎসাহী হয়ে অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করার আগেই আন্দোলনের সঙ্গে আপনার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী একটি গর্হিত কাজ। সুতরাং এহেন কাজের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা পত্র জারির সাত (৭) দিনের মধ্যে নিম্নস্বাক্ষরকারীর দফতরে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হলো।’
জানা যায়, ১৬ মে মানববন্ধনের প্ল্যাকার্ডে লিখা ছিলো, ‘আর করব না ধান চাষ দেখব এবার কী খাস’, ‘কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ, পাকা ধানে আগুন কেন’, ‘কৃষক মরে হীরক রাজার টনক কী নড়ে, ফসল জ্বললে জ্বলবে গদি’।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যুক্তি, ক্যাম্পাসে কিছু করতে হলে অবশ্যই প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। প্ল্যাকার্ড গুলো সরাসরি সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তা দেখানো হলে কোনো মতেই এই প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের অনুমতি দিতো না প্রাশাসন। এমন যুক্তি দেখিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজামান ভূইয়া। তিনি বলেন, ‘অনুমতি সব ধরনের কর্মসূচিতেই লাগে কিনা জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে যাই করুক অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি যদি না থাকে তাহলে প্রশাসন তো চালাতে পারবো না। যে কেউ যেকোনও কিছু করে বসবে। আমরা তো এদের অভিভাবক, যাই করুক আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে অনুমতি নিয়ে তারপর করুক। এ প্ল্যাকার্ড যদি আমাদের দেখাতো তাহলে এগুলো এ রকমভাবে লিখতে বলতাম না। ধান পুড়লে গদি পুড়বে এ কথাগুলো সরকার ও প্রশাসনকে আঘাত করে বলা।’
তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কিছু শিক্ষার্থীর দাবী, ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় তাদেরকে অনেক সংবাদ প্রকাশ করাকে নিরুৎসাহিত করেন। তবে এই দাবীটিও অস্বীকার করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজামান ভূইয়া।
বাঙালীয়ানা/জেএইচ