হঠাৎ করেই জেলেদের জালে ধরা দিতে শুরু করেছে রুপালি ইলিশ। জেলে ও ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। ভরা মৌসুমে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে-ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বঙ্গোপসাগরসহ বিভিন্ন নদ–নদী থেকে ধরে আনা ইলিশ ট্রলার থেকে খালাস করা ও  হাঁকডাক দিয়ে বেচাকেনার কাজে ব্যস্ত এখন তাঁরা। একদিনেই কিছুটা দাম কমলো ইলিশের।

রুপালি ইলিশ(সংগৃহীত ছবি)

ইলিশের মৌসুম শুরু হবার পরও কেটে গেছে দুই মাস। তবু বঙ্গোপসাগর ও উপকূলের বিভিন্ন নদ-নদীতে মিলছিল না ইলিশের দেখা। ভরা মৌসুমে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে-ব্যবসায়ীদের বলতে গেলে খালি ট্রলার নিয়েই ফিরতে হচ্ছিল। এতে তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কারণ, ধারকর্জ নিয়ে জাল ও ট্রলার তৈরি করে ইলিশ ধরতে গিয়ে প্রতিনিয়ত শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছিল তাঁদের।

এখন প্রত্যেক ট্রলারে ৬০-৭০ মণ মাছ নিয়ে ফিরেছেন তাঁরা। গতকাল সকালে এ রকম অন্তত ৩০টি ট্রলার দেখা গেছে পোর্ট রোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। আরও অনেক ট্রলার সাগর থেকে ফেরার পথে রয়েছে বলে জানা গেছে।

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় এক দিনেই দাম বেশ কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দুদিন আগেও যেখানে ৪০০-৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৪০-৫০ হাজার টাকা পাইকারি দামে বিক্রি হতো, সেখানে গতকাল তা এক ধাক্কায় ২০-২১ হাজার টাকায় নেমে আসে।

নগণ্যসংখ্যক ইলিশ ধরা পড়ায় বরিশালের অন্যতম মোকাম পোর্ট রোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং পটুয়াখালীর বড় মৎস্যবন্দর মহিপুর-আলীপুর ও কুয়াকাটার মাছের আড়তগুলো ঠিক জমে উঠছিল না।  দামটাও অনেক বেড়ে যায়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ পাঠানো যাচ্ছিল না। এই যখন অবস্থা তখন হঠাৎ করে জেলেদের জালে ধরা দিতে শুরু করল রুপালি ইলিশ। ফলে জেলে ও ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে দেখা গেল আনন্দের ঝিলিক।

রুপালি ইলিশ  (সংগৃহীত ছবি)

মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এসে নগরের প্রধান মৎস্য আড়ত বন্দর পোর্ট রোড ভরে গেছে ইলিশের প্রাচুর্যে। জেলে-ব্যবসায়ী-আড়তদারের মলিন চেহারা পাল্টে গিয়ে সবার মধ্যেই হাসিখুশি ভাব। কারণ, বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় নদ-নদীগুলো থেকে ফেরা ট্রলার ছিল ইলিশে ভরা। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরে ওঠে পোর্ট রোড এলাকা। ট্রলারের খোল খুলে একদল শ্রমিক ডেকে বা মেঝেতে একে একে ইলিশ তুলছেন তো আরেক দল ঝাঁপিতে করে সেগুলো বন্দরের শেডের নিচে স্তূপ করে রাখছেন। বারবার লঘুচাপ ও নিম্নচাপসহ সাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে এখন থেকে প্রচুর ইলিশ মিলবে বলে তাঁরা আশা করছেন মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.