নিরবতা
বিষাদের পিছু পিছু পিছলে
ভিতরে ঢুকে পড়ে নিরবতা
যেন তার বিশ্বস্ত অনুচর
হৃৎপিণ্ডের ঘোর অন্ধকার
চোরা কুঠুরিতে ডেরা বাঁধে
একাকিত্বের অভিসারে
অতঃপর ক্রমশ মিলিয়ে যায়
ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর ছায়ায়
বুক ধড়ফড় করা স্মৃতির সাথে
জানুয়ারি ৪, ২০২০

বরিষণ দিনে
পথের ধারে জলাধারে
টুপ করে দেয় ডুব
কই টিপি ছানা
খলশে-শোলের পোনা
জলে ছাড়া বুদবুদ
নিমিষেই যায় মিশে
টোকা দেয় আবেশে
কাগজের নৌকায়
সযতনে এঁকে রাখা
বর্ষার স্মৃতির খাতায়
সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০

শুক্রবার
শুক্রবার আমার সাপ্তাহিক ছুটি দিন
কিন্তু সংসারের ছুটির দিন কোথায়?
আশকারাতে গা ম্যাজম্যাজ করা ঘুম
কিংবা মুখে জলের ছিটায় গাত্রোত্থান
অতঃপর সকাল বেলার হাঁটাহাঁটি।
তারপর বজ্রপাতসহ ঝড়
মাঝেমধ্যে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি
দুইজনের গালগল্প খুনসুটি
যুদ্ধ সন্ধি অবিরাম সারাবেলা।
দুপুর বেলা সাপ্তাহিক প্রার্থনা
অতঃপর সাক্ষী-সাবুদ এজলাস
কখনো বিচারক কখনো দোষী
ভারি হয়ে আসে চোখের পাতা
তবু থাকতে হয় বালিশ ছাড়া।
আর, একাকী ছুটির দিনগুলো
দম ছাড়া ঘড়ির মতো হাঁপায়
বেরসিক বাসের হর্ণ বারংবার
যেমন বাধা দেয় মুঠোফোনালাপ
সবিরাম ঘেউঘেউ ঘুনপোকার ক্যাটকুট
প্রহরীর বাঁশি আর এপাশ ওপাশ।
সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২

বাতিঘর
ক খ গ বা ঘ বাতিঘর এক
কখনো-বা জীবনের মানে
অধিকাংশ কবিতার শুরু
হয় নিরাশার সাগর থেকে।
কারো প্রয়োজন উদ্দীপনা
কারো প্রয়োজন স্বীকৃতি
কারো প্রয়োজন দুটোই
নইলে সাগরটা অথৈ!
ক খ গ বা ঘ বাতিঘর এক
অফুরন্ত প্রেরণার আধার
সেই জানে যে পড়েছে তার
মহাকাব্য ছড়ানো প্রান্তর।
আগস্ট ২০, ২০২২

কবি ও প্রেমিকা
দেখ চেয়ে দেখ, শুক্লপক্ষের চাঁদ
কেমন আলো ঝলমল করে
মেঘের দল আলিঙ্গন কামনায়
ছুটে চলেছে সব তার পানে
এমন শুকনো শ্রাবণীতে অবিরাম!
নিশি ডাক পেল কি তোমায়?
খিড়কি-দুয়ার পথে আনমনে
বের হলে দৃষ্টি আকাশ পানে
রাতজাগা পাখি, ঘাসের ফিসফাস
পাতায় পাতায় কথোপকথন
চন্দ্রাহত উদাস অবলোকন
আমি তো চেয়েছিলাম প্রগাঢ় চুম্বন
অথচ শোনালে আরেকটি কবিতা!
আগস্ট ১১, ২০২২

পুরস্কার
জলে একটু কম্পন অনুভব করতেই
মুখটা বন্ধ করে ডুব দিলো শামুক
এ দিকে প্রতিবেশী ঝিনুক
বালিকে মোড়ক দিয়ে বানালো
অপূর্ব সুন্দর আলোকছটা
অসামান্য কীর্তিতে
বেঘোরে প্রাণ গেল তার
সৃজনশীলতার হাতেনাতে পুরস্কার।
আগস্ট ৬, ২০২২

লেখক:
টিটো মোস্তাফিজ, কবি