দীপ তোমার মনে আছে সে সোনাঝরা যন্ত্রণাময় বিকেলটার কথা? আমার কিন্তু খুব মনে আছে। বেশি না এইতো বছর ছয়েক আগের কথা।
কাদের মোল্লার ভি চিহ্ন আর হাসিমুখ দেখার পর, আমাদের সব কিছু উলোট পালট হয়ে গেছিলো। ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তোমার সাথে পরিচয় হয়। খুব শক্ত ছিল মুখটা তোমার। তুমিতো জীবন দিতেই এসেছিলে। আমি বলেছিলাম এবার জীবন নেব, দেব না… অনেক দিয়েছি… হ্যা তখন ফুটছিলাম সবাই, শিরায় উপশিরায় টগবগ করছিল…
খানিক পরেই তোমার আর আমার মুষ্টিবদ্ধ হাত একসাথেই উঠেছিল।
জানো দীপ আমরা জিতে গেছি… তবে বড় মূল্যা দিতে হয়েছে। কাদের মোল্লা সহ সবাইকে ঝুলিয়েছি। জাফর মুন্সী, রাজীব, জগৎ জ্যোতির পথ ধরলে তুমিও। আবার মনে করিয়ে দিলে মূল্যটা খুব চড়া…
তোমার মনে আছে দীপ? ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বলছিলা, রিয়াদ ভাই একটু সাবধানে থাকেন, আপনার বাবু আছে। আমি বলছিলাম হ এরকম অনেকেরই বাচ্চা আছে, বউ আছে বুঝলাম। কিন্তু কারো কারো প্রেমিকাও থাকতে পারে, তাদের কি হবে? হাসলাম দুজনে।
এরপরতো শুরু হলো বিচ্ছিন্ন হওয়া… বিভ্রান্তির চোরাস্রোত… অতিমাত্রায় বিপ্লব… ওসব আর বলতে চাই না।
হেফাজতের কোপ খেলে তুমি। এরপর তোমার দীর্ঘ লড়াই। আমাদের চাওয়া কিছুই কাজে লাগলো না, তুমি চলে গেলে। একা একা ভীষণ কেঁদেছিলাম। জানো দ্বীপ এখন আর কাঁদতে পারি না। সময়ের কোপে ঝাঁঝরা হয়ে গেছি। শুধু ১জুলাই আসলে এলোমেলো লাগে। কারণ এদিনই খবর পেয়েছিলাম তুমি রেসপন্স করছো না। পরের দিন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসেছিল… যা আমরা শুনতে চাইনি।
তুমিতো জীবন দিতেই এসেছিলে…
আরিফ রায়হান দীপ… তুমি না একটা যাচ্ছেতাই.. খুব ছোট হয়ে বেঁচে আছিরে ভাই।
জানিস এখন কোথাও নেই আমরা। তবুও তুই আছিস… বড় মূল্য দিয়েই আছিস…
লেখক:
তৌহিদুল আলম রিয়াদ, সাংবাদিক, এক্টিভিষ্ট