পাখি-ভাষা
আমি তো পাখির ভাষা এখনও বুঝি না।
এ ভাষা শিখতে হলে পাখি হতে হবে।
আমি পাখি হতে চাই।
পাখির আহ্বান শুনে
আমার উড়ান আমি শুরু করতে চাই।
পাখির ভাষার কাছে
শিশুর বিস্ময় নিয়ে জেগে থাকতে চাই।
আমি পাখি হতে চাই।
০১.১১.২০২১

হাততালি
কাউকে ডোবাতে হলে বেশ করে হাততালি দাও
কাউকে ভাসাতে হলে তাও—
হাততালি, বিপর্যয়, হাততালি, অচেনা অসুখ—
তাতে কতো লিপ্ত ও ভংগুর ভংগিমা, অপমান, অসূয়া ও জিঘাংসার পার—
ভাবা যায় ভাবা যায়?
তুমি তো কেতকি চালে কৌতুকের সব ভারা নিয়ে অপসৃয়মান এক নদীর কিনারে বসে কাঁদো— হাততালি পেলে—সব জানি।
তবুও তো আসমুদ্রহিমাচল বেদনাবিধুর করে কাঁদো বিধুমুখী
অপ্রাপণীয়ের বেদনায় হাততালি
কোনো উপশম নয—
কেবল ইংগিতবাহী বাতিঘর যেন।
মৃতচোখ, তাকে তো উল্লাসগান শোনাতে পারে না।
আমি তাই হাততালি পেছনে ফেলেছি। যেন কচ্ছপের গান, যেন জিতে যাওয়া—
যেন অতিমাত্রা চালাক খরগোশ আর তার দ্রুত উচ্চস্বর আপ্লুত ক্রন্দন।
২৫.১০.২০২১

পাখির আকাশ
পাখির আকাশ আছে গুঞ্জনভরা।
আমার কেবল মাটি, সংকুচিত। অর্ধনিমীলিত। সংহারী মূর্তির উপমা।
রক্তপাতে বহুঋদ্ধ।
রিরংসা-বিবশ-মুখচ্ছদ।
ঘৃণা আর ক্রোধের মহামান্য প্রতিচ্ছবি যেন।
মমতা ও করুণা অচেনা তার।
নিরীহের অপমানে উল্লোলিত এই মাটি।
তার কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
সে বিশ্বাস করে শুধু হত্যা ও দখলে।
তবুও মাটিতে থেকে নতমুখী মানুষের অপমান গুনি।
উড্ডীন হবার জন্যে দীর্ঘস্থায়ী পাখার অভাব
অসহায় করে তোলে মানুষের মুখ।
অযথা গুঞ্জনমালা মাটি-পৃথিবীর বড়ো অসহ্য এখন।
১৩. ১১. ২০২১

শিরোনামহীন
আমার সংশয় নেই। শোভা নেই। অপরাহ্ন নেই।
আমি গড়ানো মানুষ।
শুয়ে থাকা আমার স্বভাব। দিনান্তের অবসন্ন ব্যাকুল পাখির
যতো ডানা ঝাপটানোর অলিখিত শব্দমালা—
আমি তার প্রায় অদৃশ্য প্রতিবিম্ব এক।
আমার কুঠার নেই অকারণ প্রতিহিংসাভরা।
বৃক্ষের পায়ের নিচে বসে থাকি বুদ্ধের ছায়া হবো ভেবে।
আমার চারপাশে অজস্র দরোজা ছিলো।
একে একে পেরিয়ে এসেছি।
ডান বাম উর্ধ্ব অধ:— দশ দিক খোলা।
অহম্ বিসর্জিত।
শুধুমাত্র সোহম্ রয়েছে।
কিম্বা সেইসবও নয়।
২৫. ০৭. ২০২১
লেখক:
তুষার দাশ, কবি