এই সময়ের বহুল আলোচিত ডকুফিল্ম ‘হাসিনা: এ ডটারস টেল’ মুক্তি পেয়েছে শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রে, একজন মমতাময়ী মা, আদর্শ স্ত্রী এবং যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তানের কথাই উঠে এসেছে তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদটা ছাপিয়ে।
কিন্তু আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘হাসিনা: আ ডটার’স টেল’-এর প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনী বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। বিএনপি’র দাবী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এই তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী এক রকমের প্রচারণা যা নির্বাচনী আইন লংঘনের সামিল।
বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার, ১৭ নভেম্বর, এক সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। সেখান এই প্রামাণ্যচিত্রে দেশের ইতিহাস, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ক্ষমতার পালাবদল নিয়ে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশিত হচ্ছে, যা নির্বাচনী আচরণ বিধির লংঘন।’ রুহুল কবির রিজভী আরও দাবী করেন, এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কোন প্রকার দৃষ্টি দিচ্ছেন না।
রিজভী বলেন, ভোটের ২১ দিন আগে প্রচার-প্রচারণা চালানো যায়। তাঁর প্রশ্ন, তফসিল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তৈরি ডকুড্রামা ‘হাসিনা: এ ডটার’স টেল’ কি প্রচারণা নয়? তিনি আরও বলেন, একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী আচরণবিধি ন্যূনতম অনুসরণ করছেন না। এ বিষয়ে পুরোপুরি নির্বিকার সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন।
তাছাড়া, বিভিন্ন টেলিভিশন ও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিলবোর্ডে এই তথ্যচিত্রের প্রচারণার সমালোচনা করেছেন। তাছাড়া অবিলম্বে বিভিন্ন জায়গায় তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনী বন্ধের দাবী জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি মালার ১৪ (২) ধারা ‘ভঙ্গ করে’ গণভবনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়া ও নির্বাচনী আচরণবিধির ১২ ধারা তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “এখানে বলা আছে, ভোটগ্রহণের তিন সাপ্তাহ পূর্বে কোনো প্রকার প্রচার শুরু করা যাবে না। একইসঙ্গে বিধিমালার ১০ (ঙ) ধারা অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রার্থীর ছবি বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না। এই ডকুমেন্টারি ফিল্মটি কি প্রচারণামূলক নয়?”
নির্বাচনী বিধিতে পোস্টার ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকার কোথাও পোস্টার সাঁটানোর কোনো সুযোগ নাই। অথচ ডকুমেন্টারি ফিল্মটি সিটি করপোরেশন এলাকায় অর্থাৎ সিনেমা হলগুলোয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত পোস্টারসহ রীতিমতো মহড়া আকারে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।”
নির্বাচন কমিশনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে রিজভী বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে বলব, আপনারা দ্রুত আচরণবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার চেষ্টা করুন। অন্যথায় আপনাদের পরিচালনায় যে নির্বাচন, তা জনগনের কাছে উপহাসে পরিণত হবে।”
বাঙালীয়ানা/জেএইচ