শনিবার জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে-তে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করলেও রাখাইন পরিস্থিতি বাস্তবিক অর্থ ভিন্ন। এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা UNHCR বলেছে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে উপযুক্ত পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি।

রাখাইন সংকটকে দীর্ঘদিনের সমস্যা উল্লেখ করে, খুব শিগগিরই এর সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারকে অব্যাহতভাবে তাগাদা দিয়ে আসলেও এতে যেন দেশটির কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।  আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বের জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করলেও এবার সু চি বললেন, রাখাইনের অধিবাসীদের দ্রুত ফেরত নেয়া সম্ভব নয়। রাখাইনসহ মিয়ানমারে চলমান বিভিন্ন সংকট নিয়ে জাপানি গণমাধ্যম এনএইচকে’তে সাক্ষাৎকারে সমস্যা বুঝে কথা বলতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

অং সান সু চি বলেন, ‘অনেকেই আছেন যারা রাখাইনের বাস্তবতা বুঝতে চাইছেন না। সবাই যেমনটা মনে করছেন সেখানকার পরিস্থিতি আসলে তেমন না। দ্রুত এই সংকট সমাধানের জন্য সবাই তাগাদা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা চাইলেই এত দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করতে পারবো না। এটা দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। তাই আমাদের সময়ের প্রয়োজন।’

রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেয়ার বিষয়েও কথা বলেন সু চি। মিয়ানমার মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে পুরো বিষয়টি আদালতের ওপর চাপিয়ে দেন তিনি। কানাডার সম্মানজনক নাগরিকত্ব প্রত্যাহার ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বাতিলের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, এতে তার কিছু আসে যায় না।

সু চি বলেন, ‘নোবেলের মতো পুরস্কার বা সম্মাননা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। পুরস্কার চেয়ে বন্ধুত্বটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর উচিত ছিল আমাদের সমস্যা বুঝে কথা বলা। আমি মনে করি বন্ধুত্ব মানেই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধার ব্যাপার। কিন্তু যারা পরিস্থিতি না বুঝে আমাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়, তারা আমাদের বন্ধু হতে পারে না।’

এদিকে, রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরার মতো অনুকূল পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা UNHCR। এক বিবৃতিতে সংস্থার মুখপাত্র বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো গুরুত্বপূর্ণ হলেও এ মুহূর্তে সম্মানের সঙ্গে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়।

বাঙালীয়ানা/এমএইচ/এআর

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.