পারমিতা চক্রবর্ত্তীর কবিতা

Comments

ঈশ্বর

আমার ঈশ্বর টুকরো টুকরো করেছে
দাসত্ব তার আর ভালো লাগে না
তিনি এখন অন্য দেবালয়ে
তবুও
আমি রোজ পুজো করি
সুগন্ধী ধূপ জ্বালি
ভাঙা মন্দিরের পিছনে
বুড়ো অশ্বত্থ তলায়
আমার সর্বস্ব নিয়ে চলে গেছে
ওই পোড়া নদীটি
আমার গোপন চিঠিগুলো রয়ে গেছে ওর গর্ভে

ঈশ্বর ও শয়তান

ওই ঈশ্বর শয়তান
যাকে রেখে গেছে
কোনদিন আমার ঈশ্বর হতে পারেনি
ছিন্ন হয়েও জুড়ে দিয়েছে
তাকে কী শয়তান বলা যায়!
বুকে কোন ভয়ডর নেই
কামনার থেকে কালো ঝড়
আর কী বা আছে!
মাতালের মতো খুঁজে চলেছি তাকে
হাত, পা ফাঁক করে উপবাসী হয়ে ঘুরছে
ও মেঘ
ও লক্ষ্মীসোনা তুমি আমাকে
তার কাছে নিয়ে চলো একটি বার
আমি জানি সে সারা দেহে অশান্তির পসার সাজিয়ে বসে আছে

চুমুর গেলাস

চুমুর গেলাস সাজিয়ে বসে আছে
মাদল বাতাস
বুকের ভিতর দ্রিমিক দ্রিমিক আওয়াজ ওঠে

ও খোঁপায় এত জল জমেছে
কোথা হতে…

ও মেয়ে তুই যে কাল ঝর্ণা দেখতে যাবি বললি
যাসনি কেন?
চল তোকে নিয়ে যাই
ওই কালো জলই
তোর ভবিষ্যৎ

পরস্ত্রী

সমস্ত হিসেব নিকেশ শেষ করে
তোমার কাছে দাঁড়াই
জানি পরস্ত্রী ভেবে দূরে সরিয়ে রাখো
ভালোবাসো আড়ালে, আবডালে
হৃদয়খানি ভাসাও জলজ লতার মতো
প্রতিদিন এত কর্কশ রুচিতে নিজেকে
পুড়িয়ে মারছো
বর্ষার ভ্রুলতা তোমায় প্লাবিত করুক
নিজস্ব গৃহে প্রজার মতো বাস করো না আর
তুমি বেশিদিন বাঁচবে না জানি
আমিও তা চাই না

মরা

কারা এত ডাকাডাকি করে
এত লোক লস্করের কী বা প্রয়োজন?
এই বিষাদ বেশিদিন টিকবে না
কারই এত সময় আছে
সবই দম দেওয়া পুতুল
শুধু হাত পা নেড়ে চলেছে
পুড়তে তো হবেই
মরা হয়ে থেকে কী লাভ!

লেখক:
Paromita Chakrabarty
পারমিতা চক্রবর্ত্তী, কবি, গদ্যকার ও প্রকাশক, কোলকাতা নিবাসী 

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.

About Author

বাঙালীয়ানা স্টাফ করসপন্ডেন্ট