প্রেম আছে কান্না আছে ।  নূর কামরুন নাহার

Comments

বৈশাখের ত্যাড়া রোদ। মেয়েটা পরীর দেশের পোশাক পরে ঘরে ঢোকে। বিছানায় ফুল তোলা বেডকাভার। মেয়েটা বিছানার ওপর বসে। কানের পাথরের দুল ঝিলিক দেয়। জানালার বাইরে তেজী দিন। মাথার উপরে ফ্যান ঘোরে। তেজ বোঝা যায় না। জানালা দিয়ে মেয়েটা দিন দেখে। রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছে লাল সাদা শাড়ি। মাথায় মাথায় ফুলের মুকুট, হাতে হাতে হাত ভরা চুড়ি। ঠোঁটে কৃষ্ণচূড়ার লাল। রঙিন রঙিন মুখগুলো রোদে ধাঁ ধাঁ করে। বাতাসে ফেনার মতো ভাসে উৎসব।

সুর্য মাথার ঠিক ওপরে। আহা! এই রোদের মধ্য দিয়ে এসেছে পরীর মতো মেয়েটা। চুল খোলা। ঘন কালো চুল। দু’একটা কপালের কাছে পড়ে আছে। সাদা মসলিনে সোনালী জরির কাজ করা জামা বাতাসে দোলে। ওড়না ওড়ে। মেয়েটাকে দেখে ভিতরটা ঠান্ডা মাঠার মতো হয়ে যায় পেয়ারার। হৃদয় মায়ায় গলে যায় –

তোমারে একগ্লাস শরবত দেই।
না, না আপা শরবত লাগবে না।

শরবতের পিয়াস নাই তার। সে বুকের কথাগুলোকে আলগা করতে চায়। হাত ধরে বলে- আপা বসেন, কথা বলি।

চুলায় রান্না। পহেলা বৈশাখ। বছরের প্রথম দিন। সবার ঘরেই ভালো – মন্দ রান্না হচ্ছে। অনেকেই গেছে রমনায় পান্তা ইলিশ খেতে। গনগনে আকাশে সাদা মেঘ আর টকটকে আগুন লালের আঁচল উড়িয়ে দিয়েছে মেয়েরা। ছেলেরা লাল, নীল সাদা বাহারি পাঞ্জাবি পরেছে। ফুটপাথ, রাজপথ, পার্ক আনকোরা রঙিন পোশাকে থৈ থৈ করছে। কাঁধে, পিঠে হাত রেখে জড়াজড়ি করে হাঁটছে জুটির দল। গরমে জিহ্বা বের করে আইসক্রিম খাচ্ছে। হেঁটে যাচ্ছে। ভেউ ভেউ করে কান্নার মতো উচ্চকন্ঠে গান গাচ্ছে। জায়গায় জায়গায় বসেছে বৈশাখি মেলা। ঢোল বাজছে, একতারা বাজছে। এই সময় মেয়েটা এসেছে পেয়ারার কাছে। পেয়ারা মেয়েটাকে আসতে বলেছে। পেয়ারা মেয়েটাকে দাওয়াত, না ঠিক দাওয়াত না, বলেছে – দুপুরে আমার সাথে দুটা ভাত খাবা। মেয়েটা এসেছে। বসে আছে ফুল তোলা চাদরের বিছানার ওপর। পেয়ারা বেগমের চুলায় রান্না। পেয়ারা বেগম যখন তাকে কাল রাতে দুইটা ভাত খাবা বলে দাওয়াত দিয়েছে। তখন সে উত্তর করেছে – আপা আসবো। খাওয়া বড় কথা না। আপনার সাথে কথা বলব।

কথার একটা বড় পাহাড় আছে তার। কথার পাহাড় থাকলেই কথাগুলো উদোম করা যায় না। কথাগুলোকে ঢেকে রাখতে হয়। ঢেকে রাখার জন্যই এই বুকটা। বুকের ভেতর এখন এই পাহাড়টা আছে। সে পেয়ারা বেগমের কাছে এসেছে এই পাহাড়টাকে নামাতে। সবার কাছে কথার পাহাড় নামানো যায় না। পেয়ারা বেগম তার সমবয়সী বন্ধু না, কম করে হলেও ১২-১৩ বছরের বড়। কিন্তু কথা বলবার জন্য সমবয়সী লাগে না, লাগে মন। মেয়ে বুঝেছে পেয়ারার সেই মন আছে। পেয়ারা দেখেছে মেয়েটার চোখ, এই চোখ গহীন জলের।

পেয়ারা চুলার রান্না দেখে। আর ফাঁকে মেয়েটার কাছে এসে দাঁড়ায়।

দাঁড়াও আর একটু, রান্না এখনি শেষ হয়ে যাবে। তারপর আমরা গল্প করবো। তোমারে কি এক কাপ চা দেবো।
আপা আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমি চা খাবো না।

এই মেয়ের চায়ের কোনো পিপাসা নাই। আছে শুধু কথা বলার তৃষ্ণা। তার ভিতরে কথার একটা নদী উত্থাল পাথাল করছে। সেই নদীটাকে আজ বইয়ে দেবে সে পেয়ারার কাছে।

বছরের প্রথম দিন। ভালো-মন্দ খাওয়ার দিন। সবাই ফুর্তি করতে বের হয়েছে। মেয়ে বের হয়নি। মেয়ে বসে আছে ফুল তোলা চাদরের বিছানায় পেয়ারা বেগমের কাছে। কথাগুলো সে ঢেলে দেবে। পেয়ারা রান্না শেষ করে। মেয়েটার কাছে এসে বসে – তোমার কি গরম লাগছে?
না, না আমি একদম ঠিক আছি। আপা বসেন কথা বলি।

বাইরের আকাশ রোদে ফাটে। কথা বলার পিপাসায় মেয়ের বুক ফাটে।

পেয়ারা বলে – বলো তোমার সব কথা বলো। আমিও তো শুনতেই চাই ।

বাইরে গাছের পাতা নড়ে। বাতাসে আগুন ঝরে ঝরে পরে। মেয়ের মুখ থেকে কোনো কথা ঝরে না।

পেয়ারা খিলখিল করে হাসে – এই দেখো কেমন মেয়ে মুখ দিয়ে তো কথাই বের হচ্ছে না। শুরু করো,

মেয়ে এদিক ওদিক তাকায়। বাতাস ঘরের ভেতর পাক দিয়ে যায়। মেয়ে কথা শুরু করে না।

তোমার কি লজ্জা লাগছে?

না আপা, আপনার কাছে লজ্জা কি! জ্বলে যাচ্ছে। ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে। আমার মেয়েটা, মেয়েটার জন্য বুক জ্বলে। মেয়ের মা কখনও সংসার ভাঙতে পারে না। চেষ্টা করে, চেষ্টা করে, শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে। আমিও করে যাচ্ছি। আর পারি না। এখন সেপারেশন চলছে। বিয়ে হয়েছে। কিন্তু বউয়ের সন্মান পাইনি।  

পেয়ারা হাসে – আহা মেয়ে তুমি যে কত বোকা। বউয়ের আবার সম্মান! এমন আজব কথা কেউ শুনছে নাকি! বউয়ের আবার সম্মান!

না, সম্মান নেই। বাড়ির  কুকুরের আছে, বউয়ের নেই। বিয়ে হয়েছে ছোট বেলায়। বড় ঘর। আম্মা খুব খুশি। সবাই বলেছে— বাপরে বাপ! কি বড় ঘর! তিন গ্রামের সেরা। শ্বশুর রূপ দেখে জিদ ধরেছে এই মেয়েই নিয়ে যাবে। শ্বশুরের বন্ধুর মেয়ে ঠিক করা ছিলো। সে মেয়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গেছে। শ্বশুর জিদ ধরেছে ঐ মেয়ের চেয়েও সুন্দরী বিয়ে করাবে। জিদ ধরে সাধারণ ঘরের মেয়ে নিয়ে গেছে। সুন্দরী বাদী নিয়ে গেছে, বউ নেয়নি।

মেয়ে দু’হাতে মুখ ঢাকে। ফুঁপিয়ে কাঁদে – সারাদিন কাজ করেছি। মন খুঁজেছি। না কোনো মন পাইনি। কেউ মন দেয়নি। শুধু বিষ দিয়েছে, বিষ। বিষ খেয়ে বিষ হজম করেছি। মেয়ে হয়েছে। মেয়ের জন্য সহ্য করেছি। বেহায়া কুকুরের মতো পড়ে থেকেছি। দিনে দিনে ঘরের আসবাব হয়ে গেছি। তবু থেকেছি। নিজের সম্মান নেই। এবার মায়ের সম্মান ধরে টান দেয়। বিধবা মা। এখনও গা ভরা রূপ। শ্বশুর মায়ের গায়ে হাত দেয়। সেই দিনই ওই বাড়ি ছাড়ি। সাধারণ ঘরের মেয়ে কিন্তু সম্বল একটাই পড়াশোনা জানি।

খুব ভালো করেছো। নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াবে।

দাঁড়াতে দেয় না তো কেউ। বউয়ের সম্মান ছিলো না। কিন্তু বাড়ির তো সম্মান আছে। বাড়ির বউ চলে গেছে। বাড়ির সম্মান নষ্ট হয়েছে। বউকে আবার বাড়িতে আনতেই হবে। সে তো আমাকে ভালোবাসে না। আমিও তাকে ভালোবাসি না। আমার জন্য তার  কোনো প্রেম নেই। বাড়ির জন্য আছে। সে বলে – চলে গেলে যাও, কিন্ত ছাড়াছাড়ি নাই। বাড়ির বউ কোথাও অন্য বিয়ে করতে পারবে না। বাড়ির মান যাবে।

মেয়ে থামে। বাতাসে ধূলো উড়ে। পেয়ারা শাড়ির আঁচল খুঁটে – সে কি আবার বিয়ে করেছে?

সে এখনও বিয়ে করে নাই। তার অন্য পছন্দ আছে। ছাড়াছাড়ি তো হয়নি। ঝুলে আছে। আড়াই বছর ঝুলে আছে। সে আমাকে ছাড়বেও না, সম্মান দিয়ে নেবেও না। সে বাড়ির মান রাখবে। আমাকে একটা গাছ বানাবে, গাছ। বাড়ির সম্মান রক্ষার গাছ। সম্মান দেবে কি! সে তো কোনদিন আমাকে ভালোবাসেনি। ভালো করে কোনদিন কথাও বলেনি।

মেয়েটা চোখ মোছে। পেয়ারা মাথায় হাত দেয় – তুমি তোমার নিজের জীবন দেখো। তোমার মেয়েটার ভালো দেখো। সে সম্মান না দিক তার জন্য তুমি বসে থাকবে কেন? তোমার জীবন তুমি গড়বে। আর কোনো দিকে তাকাবে না।

সেটাই তো চাই। কিন্তু মেয়েকে দেবে না। বলে দিয়েছে ছাড়াছাড়ি হলে মেয়ে নিয়ে যাবে। আমার মাকে অসম্মান করবে। ওরা ক্ষমতাবান সব পারবে। মেয়ের কথা ভাবি। মার কথা ভাবি। নিজেও ছাড়তে পারি না।

পেয়ারা আবার মাথায় হাত রাখে – মনকে শক্ত কর।

মেয়ে এবার হু হু করে কাঁদে – মনকে তো কত বলি মন শোনে না। তার কথা ভাবি না। মনে এখন আর একজন। আমি একজনকে ভালোবাসি।

মেয়ে বলে কি! মেয়ে একজনকে ভালোবাসে। মেয়ে বলে কি! বুকের মধ্যে  বৈশাখের ধূলো ওঠা রোদ নিয়ে মেয়ে একজনকে ভালোবাসে।

কাকে ভালোবাসো ? সে তোমাকে ভালোবাসে?

তাকে কিছু বলিনি। সে ও আমাকে বলেনি। তবে বুঝি সেও বাসে। সাত বছর সংসার করেছি ভালোবাসা কাকে বলে বুঝিনি। স্বামী কি? কেমন লাগে? কোনো অনুভূতি জাগেনি। স্বামীর যখন মন চেয়েছে, কাছে এসেছে। মন না চাইলে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে থেকেছে। যতবার সে এসেছে ততবার মনে হয়েছে আমার শরীরের ওপর একটা পাহাড়। এই পাহাড় কখন নামবে। আর কিছু মনে হয়নি। ভালোবাসা বুঝিনি। শরীর বুঝিনি। আমি তো কোনদিন ভালোবাসিনি। এখন ভালোবাসা বুঝি। শরীর বুঝি। 

মেয়ে হুহু করে কাঁদে – আমি মেয়ের মা। জায়নামাজে পড়ে থাকি। কাঁদি। বলি – আল্লাহ মন থেকে মুছে দাও, মুছে দাও। মুছে না। আরো বেশি করে দাগ কাটে। তাকে দেখলেই শান্তি, শান্তি। জায়নামাজে পড়ে থাকি, বলি— আল্লাহ তাকে আর দেখার ইচ্ছা দিও না। আরো বেশি করে দেখতে ইচ্ছে করে। তাকে দেখলেই আনন্দ আর আনন্দ। আনন্দ করতে পারি। করি না। মেয়েটার জন্য বুক কাঁদে।  মেয়ের  জন্য বুক ফাটে।

মেয়ে ঝরঝর করে কাঁদে। পেয়ারা মাথায় হাত বোলায় হায়! হায়! মেয়ে এটা কি বললো। এ তো পেয়ারার কাহিনী। মেয়ে তার কাহিনী কি করে জানলো। সংসার পঁচিশ বছরের। কিন্তু  ভালোবাসা কই! প্রেম কই! সংসারে তো প্রেম  নেই। বেডরুম আছে। বেডরুমে বেড আছে\ তারপর সাজ গোজ আছে। ড্রইংরুম আছে। লোকেরা এসে বসে। ডাইনিং রুম আছে। চুলায় রোজ রান্না হয়। পিয়ারা বেগম মজার মজার রান্না করে। ছেলে-মেয়ে বড় হয়েছে। পেয়ারা তাদের রান্না করে খাওয়ায়। স্বামীর রান্না করে। সংসার আছে, কর্তব্য আছে। কিন্তু প্রেম নেই। বুক চৈত্রের খরা খাঁ খাঁ। তারপর বুকে নদী এলো। ভরা নদী। দু’কূল উপচানো নদী। বুকটা নদী হয়ে গেলো। পেয়ারা জানে প্রেম কি! সতের বছর আগে প্রেম এসেছিলো। গাছে ফুল ফোটার মতো ফুল ফুটেছিলো। পেয়ারা জানে প্রেম কি! বুকে প্রেম তাথৈ তাথৈ নেচেছিলো। প্রেমও তার প্রতি মজে ছিলো তার দিকে তাকিয়ে ছিলো পূর্ণ প্রেমে। আহা ! সে কি মোহ। আহা ! পৃথিবী কি সুন্দর। আহা! বুক ভরা কি আনন্দ। কি আনন্দ! কিন্তু প্রেম মানেই তো আনন্দ না। প্রেম মানেই তো মনের তাতা থৈথৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ থৈ না। প্রেম মানেই ভরা নদী না। নদী ভরেছে। চর পড়েছে। প্রেম আছে, কষ্ট আছে। ভালোবাসা আছে, কান্না আছে। পেয়ারার বুকে তো সেই কান্না, সেই কষ্ট। প্রতিদিন চুলায় রান্না করে পেয়ারা। চুলার মধ্যে কষ্ট পোড়ায়। কষ্ট পুড়ে কই? কষ্ট তো নদী হয়ে ছোটে। পাহাড় হয়ে বুকে বসে থাকে। বুকে একটা পাহাড়, বুকে একটা নদী। নদী আছে, চর আছে।

এই মেয়ে প্রেমে পড়েছে। পরীর মতো মেয়েটা প্রেমে পড়েছে। ভালোবেসেছে।  মেয়েটার একটা মেয়ে আছে। পেয়ারার ছেলে আছে, মেয়ে আছে। কেউ তো জানে না প্রেম আছে। পেয়ারার প্রেম তাকিয়ে থেকেছে, অপেক্ষা করেছে। পেয়ারা কি তাকাতে পেরেছে, পারেনি। আহা! কি মোহের সে তাকানো। পেয়ারা তো দেখেনি। জায়নামাজে পড়ে থেকেছে কেঁদেছে – প্রভু চোখ অন্ধ করে দাও। বুকে কলকল করেছে নদী, পেয়ারা জায়নামাজে পড়ে থেকেছে।

 প্রভু— বুকে চর দাও, চর। পেয়ারা জানে প্রেম কি!

মেয়েটা পেয়ারার গলা ধরে হু হু করে কাঁদে – জায়নামাজে পড়ে থাকি, কাঁদি। বলি – আল্লাহ পবিত্র থাকতে চাই। আমাকে ভুলিয়ে দাও। ভুলিয়ে দাও। কিন্তু ভুলি না। তার জন্য শরীর কাঁদে। জায়নামাজে পড়ে থাকি – আমি পাপ করবো না। আল্লাহ আমাকে ভুলিয়ে দাও। তারে যেন আর দেখতে ইচ্ছা না করে। কিন্তু মন মানে না। তারেই শুধু দেখতে ইচ্ছা করে। সেই আমার সুখ। তারে দেখলেই সুখ। সেই আমার আনন্দ। তারে দেখলেই আনন্দ। মনে হয় সেখানেই আমার নিয়তি আমার সব সুখ।

আপা আমি এখন কি করবো? কি বলবে পেয়ারা ? পেয়ারাও কি আজ এই মেয়ের গলা ধরে প্রাণ খুলে কাঁদবে ? নাকি বলবে কিছু ? কি বলবে মেয়েকে আহা! পরীর মতো মেয়ে। তুমি যেও না প্রেমের কাছে। রোজ চুলায় পোড়া দিলেও প্রেম পোড়ে না। ছাই হয় না। নাকি বলবে – যাও মেয়ে  সব মাড়িয়ে দিয়ে যাও। যাও, তোমার প্রেমের কাছে যাও। তোমার সুখ তোমার আনন্দের কাছে যাও। কিন্তু  পেয়ারা তো জানে সে-ই আমার আনন্দ। সে-ই আমার সুখ। এটাই শেষ কথা না। মেয়ে, এটাই শেষ কথা না। নদী আছে, চর আছে। প্রেম আছে, কান্না আছে।

লেখক:
Nur Quamrun Naher
নূর কামরুন নাহার, গল্পকার

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.

About Author

বাঙালীয়ানা স্টাফ করসপন্ডেন্ট