ফরিদ মুজহারের কবিতা

Comments

মেঘের কণা

বাম পকেটে মেঘের কণা
ডান পকেটে বৃষ্টি
ভেজা গায়ে লজ্জাহীনা 
মধুরতম সৃষ্টি

বাদল দিনে বজ্র হানে
চমকে উঠে দৃষ্টি
আস্তিনেতে গুটিয়ে নিলাম
বর্ষা ছোঁয়া কৃষ্টি

২৪ জুন ২০২

প্লিজ কুমিল্লা

জানলাটা একটু খুলবে কুমিল্লা,
দেখো আমরা দাঁড়িয়ে আছি
রানীর দীঘি জংশনে,
একটু পরে লাতু আসবে
পায়ে রানার স্যু, রঙিন শর্টস আর
টার্কিশ পোলো শার্ট, মিস্টার ভিক্টোরিয়া
কলেজ, স্মিত হাসি লেগে থাকা
উদ্যম, শরীরে লাগানো নানুয়া দীঘির
অক্লান্ত সুঠাম সুন্দর!

কান্দিরপাড় থেকে ক্যানভাসার জলিল,
সবে পসরা সাজিয়ে আকাশ মুখি,
কাউকে ডাকছে, ধনন্তরী আশ্চর্য মলম,
সিটি বাজছে আর
একটি টিনের সাপের ফনায় পুড়ছে
সিগারেটের ধূমায়িত অংশ, জীবীকা,
আমরা জানি তার অমীমাংসিত অর্থহীন
বাকপটু উচ্চারণ ‘ইউতে চো, চোতে ইউ’
জমবে গল্পের ভান্ডার।

ততক্ষণে লিবার্টির ম্যাটিনি শো
শুরুর প্রস্তুতি, ব্ল্যাকার টিকিট হাতে
খাইবার মেল। নায়িকা
নীলো দাঁড়িয়ে আছে হাতে
লকলকে হান্টার।

জানালা একটু খোলো কুমিল্লা,
আমি একটু যেতে চাই রানীর কুঠি
যেখানে স্মৃতিগুলো প্রত্নতত্ত্ব হয়ে
ভেসে আছে ধর্মসাগরে।
ফারুকী হাউসের পাশে গোমতী
ফুঁসছে।
তবে কি বানের জলে ভেসে যাবে শহর,

জানালাটা খোলো প্লিজ
কুমিল্লা!
বৃষ্টি শুরুর আগে মেঘ সরিয়ে
দেখে নিতে চাই স্মৃতিময় তারার আকাশ
রূপকথার অপূর্ব উপমা।

০৬ জুলাই ২০২৩

বাবা

আকাশ যেমন সূর্য রাখে
চন্দ্র আঁকে বুকে
বাবা তেমন আলোকধারা
জ্বালিয়ে রাখেন পথে।

বাবা হলেন কিংবদন্তী
বাবা জন্মদাতা
বাবা হলেন লালনপালন
বাবা অন্নদাতা।

বাবা যেনো মহীরুহ
ছায়ার আচ্ছাদন
সকল কিছু আগলে রাখেন
সকল বিভাজন।

বাবার হাতটি স্নেহ মাখা
সকল নির্ভরতা
আহার বিহার রোগ চিকিৎসা
সকল কথকতা।

বাবার পকেট ব্যাংক ভরসা
প্রতি সময় নেয়া
সকল ঋণের সেরা ঋণটি
ফেরত যায় না দেয়া।

বাবার জন্য কেউ ভাবে না
বলে নিজের কথা
আব্বা কেমন দাঁড়িয়ে থাকেন
নিরুদ্বিগ্ন একা।

০৬ জুন ২০২১

স্পর্শ ছোঁয়ায়

তুমিও এলে ঘোমটা খুলে
জলছবিতে বর্ষাতি গায় 
দোদুল দোলায়।
তুমি এলে নথ নাচিয়ে
কথায় কথায় ।
সুরের বেহাগ চালতা ফুলে
হৃদয় ভুলায়।
অভিমানী মেঘপুঞ্জ
উতল হাওয়ায়।
মৃত্তিকাতে আনন্দময়
কি বলে যায়।
গাছের শরীর পাখির ডানায়
জলপরীতে মাদল বাজায়,
বাদলা ব্যকুল ভিজে বেজায়,
মধুরেণু স্পর্শ ছোঁয়ায়।

০৯ জুন ২০২৩

অপার মুগ্ধতায়

ঐ যে দূরে দাঁড়িয়ে আছে বাবলা গাছটি,
ছাতা খুলে পাতা মেলে একটু খানি যাই?
ঘন সবুজ সঙ্গটুকু্ একটু  মিলাই?
সেখান থেকে একটু দূরে জারুলতলার
পাশ কাটিয়ে বুনো মাঁদার পথের ধারে
আম কাঁঠালের শাখায় বসা ঘুুঘুর গান শুনাই।

যেতে যেতে বোবা দুপুর বাজছে
কোথায় ক্লান্ত নূপুর, মোহন কিনারায়!
কাঁখে নিয়ে জলের শরীর,
ঢেউ খেলানো ভেজা শাড়ির!
চলছে নদী ছন্দমধুর অপার মুগ্ধতায়।

২৪ মে ২০২০

লেখক:
Fareed Mujhar01
ফরিদ মুজহার, কবি ও উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.

About Author

বাঙালীয়ানা স্টাফ করসপন্ডেন্ট