যার সঙ্গে বৃষ্টিতে ভিজি
কী যে জোরে বৃষ্টি নামল
দরজাগুলো এলোমেলো
বাতাস খুব শব্দ তুলছে
বৃষ্টি হচ্ছে, তুমি ভিজছ
বৃষ্টি সাক্ষী আমি সাক্ষী
যখন সন্ধ্যার ঘন আলোয় তোমাকে মনে পড়ার ষড়যন্ত্রে
অস্থির, তখনও তুমি কেমন হেসে হেসে ভেসে যাও
সায়াহ্নের মসৃণতায়
তোমাকে তখন পুরুষ নয়, নারী নয়, অপসৃত আঁধার
সাঁতরে আসা সহস্রকালের কোনো প্রতিজ্ঞা মনে হয়
বৃষ্টি হচ্ছে, তুমি ভিজছ
তুমি ভিজছ আমিও সঙ্গে
এই যে আমাদের খেলাঘর তার খেলার আয়োজন করে
যারা চলে গেছে তাদের নামে দিব্যি দিয়ে শুরু কোরো
যুগান্তরের মহাকাব্য, সমবেত উচ্চারণ, তীব্র স্তোত্রবৃষ্টি
স্পষ্ট করে জানাও এ-প্রলয় সংসারে কিছুই মিথ্যে নয়
আমি তার চির সমন্বয়

জলশ্বাস
ধাক্কা, সবুজে সাহারাতে আলোতে আঁধারে, বেশ বেশ
তোমাকে কি একেবারেই চিনলাম না, অদ্ভুত বিস্ময়
গরহাজির ভঙ্গিমায় চোখ পিটপিট করে তাকাল
একজীবনের গল্প অন্য জীবনে গিয়ে আড়ি পাতে
আমাদের বিচ্ছেদ বিচ্ছিন্ন নয় কিছু
কিছুটা বাতাস লাগা, কিছুটা তৈরি করা
আমরাই করেছি তা দিনে-দিনে কালে-কালে ঘোর-বেঘোরে
এই চিৎকার
এই ঊর্ধ্বশ্বাস ঈর্ষা ঢেকে ফেলে তামাদি সাজসজ্জা
একেই কি ভাবা হবে নিজস্ব বিমূর্ত আঘাত, অথবা
তারও চেয়ে বেশি কিছু জলকাটা সাম্পানের জলশ্বাস
নাকি সংযুক্ত যুগল অপঘাত

ক্রমশ মহাশূন্য ডাকে
হাইস্কুল টিচারের সঙ্গে পরিণত বয়সে
দু’চারটে ভালোবাসার গল্প বলে পথ হাঁটা ভালো
এভাবে টানা হেঁটে যাওয়া মন্দ নয়। একটা
মেঘলা নদীর জল কিছুটা গড়িয়ে আসে কাছে
সেই সাথে বয়স্ক শিক্ষা নিভৃতে ঢুকে পড়ে
ভালোবাসা থেকে টেনে নিয়ে যায় অন্য পথে
তাও মন্দ নয়, কিছুটা ভালো হয়
যদি তিনি সমাজবিজ্ঞান জানেন
ধাঁধা ধরি পরস্পর, দু-একটা গানের কলি
হেসেও উঠি বেশ! খানিকটা হাসাও ভালো
সারাদিন মুখ ভার-শিক্ষার ওজন তাতে হালকা হয়
রাজনীতি, সামাজিক ও ধর্মীয় ধাঁধা হয় খুব
পরস্পর বন্ধুর মতো পরস্পরকে হারিয়ে দিতে চাই
পথ ফুরায় না, আমরাও চাই না ফুরাক
আরও কথা হোক
কবিতার জন্ম নিয়ে কথা ওঠে, রোমাঞ্চ জাগে
কবিদের আশ্চর্য বসন্তও লেখচিত্র আঁকতে আঁকতে
রহস্য পাদটীকা হাইস্কুলের পথে ঝরে যেতে চায়
আমরা চঞ্চল হই, আমরা নিশ্চুপ হই
ক্রমশ মহাশূন্য ডাকে
লেখক:
ফেরদৌস নাহার, কবি ও গদ্যকার
ফিচার ফটো: জিয়া ইসলাম