বিবর্তনবাদকে কেনো এত ভয় । ফরিদ আহমেদ

Comments

২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসের বিশ তারিখ। সারা বিশ্বের বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানপ্রিয় মানুষদের দৃষ্টি তখন নিবদ্ধ পেনসালভ্যানিয়ার হারিসবার্গের উপর। এখানেই ঐতিহাসিক এক মামলার রায় হতে যাচ্ছে। এই রায়ের গুরুত্ব এতো বেশি যে তা মানব সভ্যতার ইতিহাসকেই পালটে দিতে পারে। মামলার বিবাদী হচ্ছে ডোভার এরিয়া স্কুল বোর্ড আর বাদীপক্ষ হচ্ছেন কিজমিলার নামের এক ভদ্রলোকসহ কিছু অভিভাবক। এই রকম এক মামলা হয়েছিলো আশি বছর আগে আমেরিকার টেনেসিতে।

ডোভারের সমস্যার শুরু হয়েছিলো শান্তভাবে। ডোভার স্কুল ডিসট্রিক্ট বোর্ডের প্রশাসকরা সভায় বসে এবং জীববিজ্ঞানে ডারউইনের বিবর্তনবাদের বিকল্প বই হিসাবে অন্য সব বই প্রস্তাব করে যেগুলোতে বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্ব রয়েছে মানব উদ্ভবের তত্ত্ব হিসাবে। বোর্ড একটা রেজ্যুলেশন পাশ করে, যেটাতে তারা সকল শিক্ষককে বিবর্তনবাদ পড়ানোর আগে একটা স্টেটমেন্ট পড়তে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষকদের বলতে হবে যে, যদিও পরীক্ষার জন্য তাদেরকে বিবর্তনবাদ পড়তে হবে, তারপরেও বলছি ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব একটা তত্ত্ব মাত্র। এটা ফ্যাক্ট না। তত্ত্বের মধ্যে ফাঁক থাকে যখন প্রমাণ থাকে না। ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন জীবন উদ্ভবের আরেক ধরনের ব্যাখ্যা, যেটা ডারউইনের তত্ত্বের বিপরীতমুখী। এই তত্ত্ব বোঝার অভিপ্রায়ে ছাত্রদের জন্য অব পাণ্ডা এন্ড এন্ড পিপল বই আছে। যে কোনো তত্ত্বের ক্ষেত্রেই ছাত্র-ছাত্রীরা যেনো তাদের মস্তিষ্ককে খোলা রাখে সেটাই আশা করা হচ্ছে।

স্কুল বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত ঝড়ের সূচনা করে। স্কুল বোর্ডের নয়জন সদস্যের মধ্যে দুইজন পদত্যাগ করেন। শুধু তাই নয়, জীববিজ্ঞানের ক্লাসে সব শিক্ষকই ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন পড়াতে অস্বীকৃতি জানান। সেটাই স্বাভাবিক ছিলো। কারণ, যতোই বিজ্ঞানের মোড়োকে পুরে এটাকে আনা হোক না কেনো, ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন বিজ্ঞান নয়। বরং এর উৎস সেই ধর্মীয় সৃষ্টিবাদই। নতুন বোতলে পুরনো মদ। আমেরিকার সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা ধর্মীয় জিনিস পড়ানো যাবে না, এটা তাদের সংবিধানেই লেখা আছে। ফলে, সংবিধানের বরখেলাপ হচ্ছে এই বিবেচনা করে এগারোজন অভিভাবক স্কুল বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন।

বিজ্ঞান এবং বিবর্তনবাদের লড়াই আশি বছর পরে আবার উঠে আসে আদালতে। এর আগে ১৯২৫ সালে টেনেসির ডেইটনে ক্লাসে বিবর্তনবাদ পড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করানো হয়েছিলো জন স্কোপস নামের একজন শিক্ষককে। সেই মামলায় তিনি হেরে যেন। হেরে না গিয়ে উপায়ও ছিলো না। কারণ, ওই আদালতের বিচারক জন রলস্টন নিজেই ছিলেন একজন ধার্মিক খ্রিস্টান। প্রার্থনা দিয়ে তিনি শুরু করতেন দিনের বিচারিক প্রক্রিয়া। স্কোপসের বিচারের সময়ে তিনি যে আইনে স্কোপস গ্রেফতার হয়েছেন, সেটাকে বিশ্লেষণ করতে রাজি হননি। স্কোপস আইন ভেঙেছে, নাকি ভাঙেনি, সেই বিচার করেছিলেন শুধু। সহজ ভাষায় বললে বলতে হয় ফেয়ার ট্রায়াল সেটা ছিলো না। স্কোপসকে হাত-পা বেঁধে বাধ্য করা হয়েছিলো দোষ স্বীকারের জন্য।

ডোভারেও সেই একই আশংকা উঠে আসে। কারণ, এখানে বিচারক ছিলেন বিচারক জন ই জোনস। তিনি জর্জ ডাব্লিউ বুশ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত। নিয়মিত চার্চে যান। একজন রক্ষণশীল রিপাবলিক্যান তিনি। ধর্মের বিরুদ্ধের বিজ্ঞানের লড়াইয়ে ধার্মিক লোক বিচারকের আসনে বসে থাকলে সেই লড়াইয়ে জিতে বের হয়ে আসাটা কষ্টকর। যিনি নিয়মিত চার্চে যান ভক্তিভরে, বিশ্বাস রাখেন বাইবেলে, তিনি বাইবেলের কল্পিত সৃষ্টিতত্ত্বতেই বিশ্বাস রাখবেন, এটাই স্বাভাবিক। বিশ্বাস করবেন এই পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব বিবর্তনের মাধ্যমে হয়নি, মানুষ লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তনের মাধ্যমে আজকের মানুষে পরিবর্তিত হয়নি, বরং ছয় হাজার বছর আগে কল্পিত কোনো এক ঈশ্বর স্বর্গ থেকে টুক করে আদম এবং ঈভকে বর্তমান রূপে ছেড়ে দিয়েছিলো এই পৃথিবীতে নিষিদ্ধ আপেল খাবার কারণে। মাত্র ছয় হাজার বছরের দুইজন মানুষ থেকে আজকের সাত বিলিয়ন মানুষ জন্মেছে। আমাদের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই নিয়ান্ডারথাল মানবদের, সম্পর্ক নেই নিরানব্বই ভাগ জিন মিলে যাওয়া শিম্পাঞ্জির সাথেও। মানুষ ইউনিক, আলাদা এক প্রজাতি, স্বর্গ থেকে যার আগমন ঘটেছে এই ধরায়, একদিন সেই স্বর্গেই প্রত্যাবর্তন করবে সে।

নিঃশ্বাস বন্ধ রেখে, দুরু দুরু বক্ষে, সবাই প্রতীক্ষায় ছিলো বিচারক জোনসের রায়ের। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তিনি রায় দেন। আশ্চর্যজনকভাবে বিবর্তনের পক্ষেই রায়টা পাঠ করেন তিনি।

কোনো ঘোরালো-পেঁচানোর কথার আশ্রয়ে তিনি যান। পরিষ্কার, দ্যর্থহীন ভাষায় স্কুল বোর্ডের সমালোচনা করেন তিনি। বিবর্তন পড়ানোর আগে এটা ফ্যাক্ট না, তত্ত্ব মাত্র এবং এর বিকল্প হিসাবে ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন তত্ত্ব রয়েছে এবং সেই বইয়ের রেফারেন্স দেওয়া যে ধর্মীয় কারণ থেকে উদ্ভূত হয়নি, স্কুল বোর্ডের এই দাবিকে তিনি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন। স্কুল বোর্ডের কর্মকাণ্ডকে তিনি ‘অবিশ্বাস্য এক উন্মাদীয় কর্মকাণ্ড’ হিসাবে অভিহিত করেন। তিনি ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনকে সৃষ্টিতত্ত্ব তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি তাঁর রায়ে বলেন, ‘দুই পক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনে যে কেনো যুক্তিবোধসম্পন্ন এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকই এই অনিবার্য উপসংহারে আসতে বাধ্য হবেন যে ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন একটা আগ্রহোদ্দীপক ধর্মতাত্ত্বিক যুক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা কোনো বিজ্ঞান নয়।”

স্কুল বোর্ডের বিবর্তনবাদকে আলাদা করে এর আগে ঘোষণাপত্র পাঠ করা যে একে বিজ্ঞান বলে অস্বীকার করার নামান্তর, যার ফলশ্রুতিতে এর বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের মনে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেবার প্রচেষ্টা সেটা বলতেও দ্বিধা করেন না তিনি। একই সাথে একটা প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের পালটা হিসাবে তাদেরকে ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া বা সৃষ্টিতত্ত্বের বই ‘অব পাণ্ডা এন্ড পিপল’-কে রেফার করাটা পাবলিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞানকে পরিহার করে ধর্মীয় ব্যাখ্যা খোঁজার দিকে নির্দেশ দেওয়া বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

বিশ্বাস এবং বিজ্ঞানের এই সংঘাত কিন্তু নতুন কিছু নয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এই সংঘাতকে এড়ানোর আসলে কোনো উপায়ও নেই। ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাস। ‘পবিত্র’ গ্রন্থে যা লেখা আছে, সেটা যতোই আজগুবি হোক না কেনো, ধার্মিককে সেটাই বিশ্বাস করে মেনে নিতে হয় যুক্তি প্রমাণ ছাড়াই। আধুনিক ধার্মিকেরা অবশ্য এগুলোকে মাঝে মাঝে বিজ্ঞান দিয়ে ভ্যালিড করে নেবার চেষ্টা চালায়। সেখানেও ঠিক সেই বিষয়গুলোকেই তারা চেরি পিক করে নিয়ে আসে, যেগুলো তাদে বিশ্বাসকে পাকাপোক্ত করে তুলবে। অথচ ব্যাপারটা হওয়া উচিত ছিলো উলটো। আগে যাচাই-বাছাই করে, তারপর সেটা সঠিক মনে হলে গ্রহণ করা উচিত ছিলো। ধর্মের ক্ষেত্রে সেটা হয় না। উচিত এবং যুক্তিসম্পন্ন বিষয় সেখানে নেই। ছোটবেলা থেকে মস্তিষ্কের গভীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এই বলে যে, এটাই সত্যি। বড়বেলায় গিয়ে সেই আজগুবি বিশ্বাসগুলোকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে, সেগুলোর স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়ার দিকেই বেশি আগ্রহ দেখায় একজন ধার্মিক মানুষ। বিজ্ঞানকে হয়তো গ্রহণও করে, তবে সেটা হয় তার বিশ্বাসকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততোটুকুই। এর বাইরে যাবার সাহস তারা দেখায় না। কারণ, সেক্ষেত্রে তার বিশ্বাসের সাথে বিজ্ঞানের দ্বন্দ্ব অনিবার্য হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তো, যেটা বলছিলাম বিশ্বাস এবং বিজ্ঞানের এই সংঘাতে আসলে বিজ্ঞানের ভূমিকা গৌণ। বিশ্বাসকে মিথ্যা প্রমাণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে বিজ্ঞান কাজ করে না। বিজ্ঞানের কাজ হচ্ছে সত্যকে উন্মোচন করা নির্মোহভাবে। সেই সত্য উন্মোচনে কে আনন্দিত হলো, কার মধ্যে বিষাদ জন্ম নিলো, কিংবা কে ক্রোধান্ধ হলো, সেটা দেখার সময় তার নেই। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই নির্মোহতা থাকলেও, বিশ্বাসের মধ্যে এই নির্মোহতা নেই। বিশ্বাস যে কোনো বিষয়েই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। না দেখানো ছাড়া আসলে তার অন্য কোনো উপায়ও থাকে না। ‘পবিত্র’ গ্রন্থগুলোতে এমন সব জিনিস লেখা আছে, যেগুলো বিজ্ঞানের এই সত্য উন্মোচনের সাথে সাথে মিথ্যায় পরিণত হয়ে যায়। অথচ, পবিত্র গ্রন্থে এগুলো সর্বজ্ঞানী ঈশ্বরের বাণী হিসাবে লিপিবদ্ধ আছে। প্রকৃত সত্য তাই ঈশ্বরের বাণীকে ভ্রান্ত বানিয়ে দিলে এর চরম অনুসারীদের নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয়। এই প্রতিক্রিয়া নানা যুগেই ধর্ম দেখিয়েছে নানা ধরনের আক্রোশ প্রকাশের মাধ্যমে।

বিজ্ঞানের অনেক কিছুর সাথেই বিশ্বাসের দ্বন্দ্ব থাকলেও সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদ এবং বিবর্তনবাদের সাথে তার সংঘাত সাপে-নেউলের মতো। বিশ্বাস নিজে যুক্তিসঙ্গত না হলেও, এই দুই মতবাদের প্রতি তার আক্রোশ কিন্তু যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত। কারণ, এই দুটো মতবাদ ধর্মের মূল ভিত্তিকে নাড়িয়ে দেয়। যেমন ধরুন, সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদের কথা। আগে মানুষ বিশ্বাস করতো আমাদের এই পৃথিবীটা হচ্ছে মহা বিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত। একে ঘিরেই সূর্য, চন্দ্র, তারা সব ঘুরছে। অর্থাৎ, আমরাই হচ্ছি সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য। বাইবেলও এই ধারণাকেই গ্রহণ করেছিলো। কোপার্নিকাস এসে যখন বললেন যে, আসলে সূর্যকে কেন্দ্র করেই আমরা ঘুরছি, সেটা ধার্মিকদের অস্তিত্বে গিয়ে আঘাত হানলো। ফলে, ভয় দেখিয়ে কোপার্নিকাসকে থামিয়ে দেওয়া হলো। তার এই তত্ত্ব নিয়ে লেখা বইটাকে তিনি প্রকাশ করেননি ভয়ে। মৃত্যুর সামান্য আগে এই বই এসে পৌঁছেছিলো তাঁর হাতে। গ্যালিলিও-কে শুধু ভয় দেখানো নয়, প্রায়শ্চিত্ত করতে বাধ্য করেছিলো চার্চ এই বলে যে তিনি যা বলেছেন তা মিথ্যা বলেছেন, আসলে সূর্য ঘোরে পৃথিবীর চারপাশে, পৃথিবী ঘোরে না। ব্রুনো এদের চেয়ে সাহসী ছিলেন। তিনি কোপার্নিকাসের তত্ত্ব প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন চার্চের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে। চার্চ এর প্রতিশোধ নিয়েছিলো তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অপরাধে। আজকে আমরা জানি, কোপার্নিকাস, গ্যালিলিও এবং ব্রুনোরাই সত্যি ছিলেন। সত্যি বলার অপরাধে তাদের শাস্তি হয়েছিলো।

সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদের বাইরে ধর্মের সবচেয়ে আক্রোশের জায়গা হচ্ছে বিবর্তনবাদ। সূর্যকেন্দ্রিক ধারণাকে বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছে চার্চ। আগে যে অন্যায় তারা করেছে সেজন্য ক্ষমাও চেয়েছে অফিসিয়ালি। কিন্তু, বিবর্তনকে মেনে নিতে পারেনি তারা। পারবেই বা কী করে? বিলিয়ন বছরের বিবর্তনে এককোষী প্রাণী থেকে বিবর্তিত হতে হতে আমরা আজকের মানুষে পরিণত হয়েছি, এটাকে স্বীকার করলে মানুষের আলাদা কোনো গুরুত্ব থাকে না। ঈশ্বর নিজের হাতে মানুষকে বানিয়েছেন, তারপর ছয় হাজার বছর আগে এই পৃথিবীতে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন, এই গল্প হাস্যকর এক ছেলেমানুষি গল্পে পরিণত হয়ে যায়। যে কারণে এই তত্ত্ব যখন ডারউইন প্রথম প্রচার করেন, তখন থেকেই এর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছে ধার্মিকেরা। ডারউইন এবং তাঁর বিবর্তনবাদ তত্ত্বকে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করতে, ঠাট্টা-তামাশা করতে কোনো ধরনের কুণ্ঠা তারা দেখায়নি। অথচ আজকে বিজ্ঞানের নানান শাখা, বিশেষ করে প্রত্নতত্ত্ব এবং জিনতত্ত্বের অগ্রগতির সাথে সাথে আমরা জানি বিবর্তনবাদ শুধু তত্ত্বই নয়, এটা ফ্যাক্ট। মানুষ বিবর্তিত একটা প্রাণী। শুধু মানুষ না, এই পৃথিবীর পুরো প্রাণীজগৎ এবং উদ্ভিদজগৎ, সবই বিবর্তনের ফসল। কাল্পনিক কোনো মহামতি ঈশ্বরের হাত নেই সেখানে।

বিবর্তনবাদকে কেনো এত ভয়, কেন বারবার হামলা এবং মামলার শিকার হতে হয়েছে, আশা করি কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন আপনারা।

লেখক:
Farid Ahmed
ফরিদ আহমেদ, প্রবাসী, প্রাক্তন শিক্ষক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

*প্রকাশিত এ লেখার মতামত এবং বানানরীতি লেখকের একান্তই নিজস্ব। বাঙালীয়ানার সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকা অস্বাভাবিক নয়। তাই এখানে প্রকাশিত লেখা বা লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা সংক্রান্ত আইনগত বা বানানরীতি বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় বাঙালীয়ানার নেই। – সম্পাদক

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.