ক্ষুধার সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম। যা পাকিস্তান, ভারত ও আফগানিস্তানের চেয়ে ভাল হলেও নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কার চেয়ে পেছনে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ক্ষুধা ও অপুষ্টির হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নতি অব্যাহত থাকলেও বাংলাদেশের অবস্থান খুব বেশি এগোয়নি। মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট চলতি বছরের যে ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচক’ প্রকাশ করেছে, তাতে ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম। ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ৯০, ৮৮ ও ৮৬ নম্বরে।
ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে ধারাবাহিকভাবে। মোট স্কোর গতবারের ২৬.১ থেকে কমে হয়েছে ২৫.৮। তারপরও বাংলাদেশ বৈশ্বিক অবস্থানে দুই ধাপ পিছিয়েছে কারণ অন্যদের উন্নতি ঘটছে আরও দ্রুত গতিতে।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুসারে বাংলাদেশের স্কোর:
সাল | ১৯৯০ | ১৯৯৫ | ২০০০ | ২০০৫ | ২০১০ | ২০১৫ | ২০১৬ | ২০১৭ | ২০১৮ | ২০১৯ |
স্কোর | ৫২.২ | ৫০.৩ | ৩৬.১ | ৩০.৭ | ৩০.৩ | ২৭.৩ | ২৭.১ | ২৬.৫ | ২৬.১ | ২৫.৮ |
ক্ষুধা সূচক বলছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ অপুষ্টির শিকার; পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ১৪ দশমিক ৪ শতাংশের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম; ওই বয়সী শিশুদের ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ শিশুর ওজন বয়সের অনুপাতে কম এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার ৩ দশমিক ২ শতাংশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার নির্ধারিত সংজ্ঞা অনুযায়ী, একটি শিশুর প্রতিদিনের গ্রহণ করা খাদ্যের পুষ্টিমান গড়ে ১৮০০ কিলোক্যালরি হতেই হবে এর কম হলে বিষয়টিকে ক্ষুধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুসারে বাংলাদেশের অবস্থান:

এদিকে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০২তম স্থানে নেমে গিয়েছে ভারত। ক্ষুধার মেটানোর তালিকায় ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও চীন। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে এগিয়ে থাকা অর্থনীতি ভারতের এই সূচকে পিছিয়ে থাকার মূল কারণ বিপুল জনসংখ্যা। খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতিতে ধারাবাহিক উন্নতি অব্যাহত রাখলেও জনসংখ্যার বিপুল বিস্তারের তুলনায় তার গতি ধীর।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সূচকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে শ্রীলঙ্কা। ১৭.১ স্কোর নিয়ে শ্রীলঙ্কার অবস্থান সূচকের ৬৬ নম্বরে। আর সাত দেশের মধ্যে ৩৩.৮ স্কোর নিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা আফগানিস্তানের অবস্থান সূচকের ১০৮ নম্বরে।
প্রসঙ্গত, অপুষ্টির হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম ওজনের শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম উচ্চতার শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার- এই চারটি মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশের স্কোর হিসাব করে ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিতে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) তৈরি করেছে। এই সূচক অনুসারে সবচেয়ে ভালো স্কোর হল শূন্য। স্কোর বাড়লে সে দেশের ক্ষুধা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে আর স্কোর কমলে সেই দেশের খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ধারণা পাওয়া যায়।
বাঙালীয়ানা/এসএল