ব্রিটিশদের আগমনের পূর্বে বাংলা ভাষায় শিক্ষা । রাহমান চৌধুরী

Comments

বাংলায় ইংরেজদের আগমনের পূর্বে তিন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার কথা জানা যায়। চতুষ্পাঠী বা টোল, মাদ্রাসা ও পাঠশালা। চতুষ্পাঠীতে মূলত সংস্কৃত ভাষায় বেদকে কেন্দ্র করেই শিক্ষা দেওয়া হতো, বাস্তবজীবনের সাথে যার সম্পর্ক ছিলো খুবই কম। চতুষ্পাঠীতে চার বেদ পড়ানোর উপরই গুরুত্ব দেওয়া হতো বলে এর নাম চতুষ্পাঠী। চতুষ্পাঠী বা টোলে ভিন্নধর্মের লোকদের তো নয়ই, বৈদিকধর্মের সকলের পড়াশুনার অধিকার ছিলো না। স্পষ্টই বলা ছিলো শূদ্র ও নারীর জন্য বেদ শিক্ষা নিষিদ্ধ। চতুষ্পাঠীতে লিপিশিক্ষা বা অক্ষরজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা ছিলো না। সবটাই ছিলো শ্রুতি, শুনে শুনে মুখস্ত করতে হতো। মাদ্রাসা শিক্ষা ছিলো সে দিক থেকে যথেষ্ট আধুনিক। মাদ্রাসার শিক্ষার বাহন ছিলো ফারসী ও আরবী। পরে সম্রাট আকবরের সময় সংস্কৃত যুক্ত করা হয়। বর্ণাক্ষরের মাধ্যমে মাদ্রাসায় ধর্মশিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্য, ভূগোল, জ্যামিতি, গণিত ইত্যাদি শেখানো হতো। মাদ্রাসায় সকল ধর্মের লোকরা পড়াশুনা করতে পারতো। ফলে মুসলিম শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ব্রাক্ষণ, ক্ষত্রিয়, শূদ্র বা কায়স্থরা মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণ করতেন। মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণ করলে সরকারী বড় বড় পদ লাভ করার সুযোগ ছিলো। আধুনিক বাংলার প্রথম আলোকপ্রাপ্ত মানুষদের একজন রামমোহন রায় মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেছিলেন। মুঘলদের পরিচালিত মাদ্রাসার চেহারা তখন আজকের মতো ছিলো না। ব্রিটিশরা ক্ষমতা লাভের পর কলকাতায় একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলো নিজেরা লেখাপড়া শিখবার জন্য।

আরও পড়ুন: বাংলা ভাষা আন্দোলনে ভদ্রলোকদের দ্বিচারিতা এবং কিছু মতামত । রাহমান চৌধুরী

মুঘল শাসনে ব্রিটিশ বা ইংরেজ বণিকরা বাংলা দখলের আগে যখন এখানে ব্যবসা করতে আসতো তারা বাংলা শিখতো আর শিখতো রাজভাষা ফারসী। ইউরোপেীয়দের মধ্যে পর্তুগিজরা বাংলায় প্রথম আসে। বাংলা তখন জমজমাট ব্যবসা কেন্দ্র। পর্তুগিজরা বুঝতে পারলো এখানে ব্যবসা বাণিজ্য করতে হলে বাংলা শিখতে হবে। স্থানীয়রা তো আর পর্তুগিজদের ভাষা শিখতে যাবে না। বাঙালীর পর্তুগিজ শেখার কোনো দায় ছিলো না, বরং পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের বাংলা শেখা দরকার ছিলো নিজস্বার্থে। ফলে বাংলা ভাষার ব্যকরণটা প্রথম পর্তুগিজদের দ্বারা লিখিত হয় যার নাম ছিলো ‘কৃপারশাস্ত্রের অর্থভেদ’। যদিও এটাকে ব্যকরণ বলা হচ্ছে, বরং বলা যায় এটা ছিলো দ্রুত বাংলা শেখার গ্রন্থ। যখন ইংরেজরা বাংলা দখল করে, তখন তাদেরকে বাংলা শিখতে হতো। বাংলা ভাষার প্রথম যেটা আসল ব্যকরণ সেটা ইংরেজরাই লিখেছিলো স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের একটি কর্তব্য ছিলো, যেসকল ইংরেজ কর্মকর্তারা বাংলা শাসন করবে তাদের স্থানীয় ভাষা শেখানো। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কিছুদিন সেখানে বাংলা শেখানোর কাজে যুক্ত ছিলেন। ব্রিটিশরা যখন ভারতবর্ষ অনেকটা দখল করলো, তখন চালাকি করে ইংরেজি ভাষা চাপিয়ে দিলো। লক্ষ্য ছিলো স্থানীয়দের দুর্বল করে ফেলা আর শাসকদের উপর নির্ভরশীল করে তোলা।

ব্রিটিশদের বঙ্গদেশে আগমনের পূর্বে বাংলা ভাষায় শিক্ষালাভের একমাত্র প্রতিষ্ঠান ছিলো পাঠশালা। পাঠশালা মাদ্রাসার মতো মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষা লাভের প্রতিষ্ঠান ছিলো না। চতুষ্পাঠী বা মাদ্রাসার মতো পাঠশালা সরকারী সাহায্য পেত না। পাঠশালা চলতো শিক্ষার্থীদের অর্থে, কিছুটা স্থানীয় জমিদারদের সহযোগিতায়। ধারণা করা হয়, ষোল শতকে পাঠাশালা শিক্ষার আরম্ভ। ইংরেজী জানবার বা শিখাবার প্রশ্ন তখন ছিলোই না। পাঠশালায় বাংলা ভাষায় ভালোভাবে চিঠিপত্র লিখতে, পুঁথি পড়তে, যোগ বিয়োগ, গুণ ভাগ করতে শেখানো হতো। ছাপাখানা ছিলো না বলে, তখন বইপত্র প্রকাশ হতো না। ছাত্রদের কাছে বইপত্র থাকতো না। পাঠশালার গুরুর কাছে থাকতো বাংলা ভাষায় লেখা নিজস্ব একটি পুঁথি, সেটাই ছিলো শিক্ষাদানের প্রধান অবলম্বন। সেখান থেকেই তিনি পাঠদান করতেন। বইপত্রের ভারে তখন ছাত্রদের করুণদশা হতো না, কিন্তু দরকার মতো শিখতে পরতো। সাধারণ ঘরের ছাত্ররাই বেশি পাঠশালায় পড়তে যেতো। শিক্ষকরাও বেশির ভাগ ছিলেন সাধারণ ঘরের।

আরও পড়ুন: বাংলা ভাষায় উচ্চশিক্ষা প্রদান এবং রবীন্দ্রনাথ । রাহমান চৌধুরী

পাঠশালার শিক্ষা কার্যক্রম চারটি স্তরে বিন্যস্ত ছিলো। প্রথম স্তর: শিক্ষার্থীরা আট দশ দিন কাটাতো মাটির উপর কাঠি দিয়ে স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের অক্ষরসমূহের উপর হাত ঘুরিয়ে। দ্বিতীয় স্তর: আড়াই থেকে চার বৎসর কাল শিক্ষার্থীরা তালপাতার উপর ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে স্বর চিহ্নসমূহ যুক্ত করা এবং যুক্তাক্ষর লেখা শিখতো। সাথে সাথে তারা সংখ্যা-তালিকা, ওজন-পরিমাপ ও টাকা-পয়সার হিসাব প্রভৃতি সম্বন্ধে শিক্ষা লাভ করতো। তৃতীয় স্তর: এই স্তরে শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই থেকে তিন বৎসরকাল কলাপাতায় লিখতো এবং সহজ গণিত, ভূমি-পরিমাপ এবং বাণিজ্যিক ও কৃষি-সংক্রান্ত হিসাবের প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা লাভ করতো। চতুর্থ স্তরে শিক্ষার্থীরা কাগজে লেখার অনুমতি পেতো। পাঁচ বৎসর বয়সে শিক্ষার্থী পাঠশালায় পড়া শুরু করতো এবং প্রায় ছয় থেকে নয় বৎসরকাল শিক্ষার্জন করতো। শিক্ষার্থীর মেধার উপর ব্যাপারটা নির্ভরশীল ছিলো।

পাঠশালায় তখন একজন গুরুর অধীনে ত্রিশ জনের মতো ছাত্র পড়াশুনা করতো। পাঠশালায় একজন শিক্ষক থাকার কারণে গুরুকে একাই বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হতো। বিভিন্ন স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীকক্ষ ছিলো না, সবাই এক সাথেই গুরুর সামনে বসতো। ধর্মশিক্ষা লাভের জন্য কেউ পাঠশালায় যেতো না। পাঠশালায় ভর্তির কোনো নির্ধারিত সময়সূচি থাকতো না। বৎসরের যে-কোনো সময় ছাত্র পাঠশালায় যোগদান করতে পারতো। কোনো বাৎসরিক পরীক্ষার প্রচলন ছিলো না। গুরু যখন মনে করতেন যে ছাত্র এক স্তরের শিক্ষা লাভ করেছে তখন তিনি সেই ছাত্রকে উপরের স্তরে উন্নীত করতেন। পাঠশালার কোনো নির্দিষ্ট বর্ষসূচীও ছিলো না। ফলে, সুবিধামতো পাঠশালা বন্ধ বা খোলা রাখা যেতো। ফসল কাটার সময়, কিংবা বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পাঠশালা বন্ধ রাখা হতো। পাঠশালা দিনে দুবেলা বসতো, ভোর থেকে দশটা পর্যন্ত আবার বেলা তিনটা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের সুবিধার প্রতি দৃষ্টি রেখেই এরূপ ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। সকাল দশটা থেকে তিনটা পর্যন্ত বিরতির সময় ছাত্ররা নিজ নিজ বাড়িতে গিয়ে স্নানাহার সম্পন্ন করতে পারতো এবং বাড়ির কিছু কাজও করতে পারতো।

পাঠশালা সম্পর্কে ইংরেজ ইভস্ লিখেছেন, ‘যদিও শিশুদের লেখাপড়া শেখার অনেক বিদ্যালয় ছিলো তবে তাতে মাতৃভাষার বেশি আর কিছু শেখানো হতো না।’ সতেরশো একানব্বই সালে ক্রফোর্ড জানাচ্ছেন, ‘সব শহরে এবং প্রধান প্রধান গ্রামগুলিতে লেখাপড়া শেখার বিদ্যালয় ছিলো।’ তিনি জানাচ্ছেন যে, খুঁটির উপর তালপাতার ছাউনি দিয়ে বিদ্যালয়-ঘর তৈরি হতো। বালকেরা মাটিতে চাটাইয়ের আসনে বসতো। তালপাতার পুঁথি ব্যবহার হতো। বাঁ হাতে পুঁথি ধরে ডান হাতে লোহার শলা দিয়ে চেপে লেখা হতো। কিন্তু প্রায়ই তারা বালিতে আঙুল দিয়ে লিখতো ও অঙ্ক কষতো। কখনো কখনো নুড়ি বা কড়ি দিয়ে গোনা অভ্যাস করতো। সতেরো শতকে যে বাংলায় বর্ণশিক্ষা বা সাক্ষরতার হার বাড়ছিলো এই সব তথ্য থেকে তা যথেষ্ট অনুমান করা যায়। উইলিয়াম ওয়ার্ড আঠারশো তিন সালে লিখেছেন, ‘অক্ষর পরিচিতির পর যুক্তাক্ষর লিখতে হতো। তারপর মানুষের নাম, গ্রামের নাম, পশুপাখীর নাম লিখতে হতো। পরে অঙ্ক লেখা শুরু হতো। শেষে কলাপাতায় যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ এবং ওজনের নিয়ম ইত্যাদি শিখতে হতো।’ বুকানন হ্যামিলটন জানাচ্ছেন যে, হিন্দু ও মুসলমান ছেলেদের প্রাথমিক শিক্ষা হতো পাঠশালায় কোনো গুরুমশাইয়ের কাছে। আর এই গুরুমশাইরা যে-কোনো বর্ণের ও ধর্মের হতো। এই পদ্ধতি ছিলো দারুণ।

ব্রিটিশ ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি ভারতে ইংরেজী ভাষায় শিক্ষাদান আরম্ভ করার পর পাঠশালা শিক্ষার ধ্বংস সাধন আরম্ভ হলো। রামমোহনের বন্ধু পাদ্রী এডাম আঠারশো পঁয়ত্রিশ সালে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, তাতে দেখা যায় প্রায় প্রত্যেক গ্রামেই বাংলা ভাষায় ন্যূনতম শিক্ষাদানের জন্য একটি পাঠশালা ছিলো। কিন্তু ইংরেজদের নতুন শিক্ষাব্যবস্থার কারণে সেগুলি টিকতে পারলো না। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘পূর্বকালে এ দেশে গ্রাম্য পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষার যে উদ্যোগ ছিলো ব্রিটিশ শাসনে ক্রমেই তা কমেছে।’ কমার কারণ কী। ইংরেজরা স্পষ্টই বলেছিলো, শিক্ষা সকলের জন্য নয়। যাদেরকে শিক্ষা দেওয়া হবে, তারা সবকিছু শিখবে ইংরেজী ভাষায়। ভারতবর্ষে ব্রিটিশদের ক্ষমতা বা শাসন টিকিয়ে রাখতে বা চালিয়ে যেতে কিছু দেশীয়দের চাকরি লাভের সুযোগ দেওয়া হবে। ইংরেজী জানা ব্যক্তিরাই সে সুযোগ লাভ করবে। ফলে পাঠশালায় শিক্ষাধারীদের চাকরি লাভের সুযোগ কমে গেল। আগে পাঠশালায় শিক্ষাধারীরা বিভিন্ন জমিদারিগুলোতে চাকরি লাভ করতো। আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও যুক্ত হতো। অনেকে লেখালেখি করতো। মধ্যযুগের বাংলায় পাঠশালায় পড়াশুনা করেই অনেক ধোপা নাপিতরা সাহিত্য চর্চা করতো যাদের নাম বাংলার ইতিহাসে রয়েছে।

প্রথমে ইংরেজরা কিন্তু ভারতীয়দের কোনো প্রকার শিক্ষা দিতেই চায়নি। কারণ তাহলে তাদের মুনাফা কমে যাবে। সেজন্য বাংলা দখলের পঞ্চান্ন বছর পর্যন্ত তারা শিক্ষাখাতে টাকা বরাদ্দ করেনি। খ্রিষ্টান মিশনারিরা চেয়েছিলো ভারতীয়দেরকে শিক্ষাদানের মধ্য দিয়ে খ্রিষ্টান বানাতে। খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারকদের চাপে তাই ইংরেজ শাসকরা আঠারশো তেরো সালে সারা ভারতের জন্য বছরে মাত্র একলক্ষ টাকা ব্যয় করতে রাজি হয়। বাংলা থেকেই তাদের আয় ছিলো বছরে পাঁচ কোটি টাকার বেশি, আর সারা ভারতের জন্য শিক্ষাখাতে ব্যয় ধরা হলো এক লক্ষ টাকা। শিক্ষায় কম টাকা খরচ করার উদ্দেশ্যে এবং আরো অসৎ উদ্দেশ্যে ব্রিটিশরা সকলকে শিক্ষা দিতে চায়নি। কিছু মানুষ যাতে ব্রিটিশদের সেবা করতে পারে, সেজন্যই তারা শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছিলো। ইংরেজদের লক্ষ্য ছিলো সামান্য কিছু মানুষকে শিক্ষিত করা, যারা ইংরেজি শিখে ইংরেজদের বশংবদ হবে, শাসকদের কাছ থেকে কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়ে ভারতে ইংরেজদের শাসনকে টিকিয়ে রাখবে। ইংরেজদের দলিলে স্পষ্ট করে বলাই হয়েছিলো, যারা ইংরেজদের বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষা করতে বদ্ধ পরিকর হবে। দরকার মতো ইংল্যাণ্ডকে কাঁচামাল সরবরাহ করবে আর ভারতে ইংল্যাণ্ডের উৎপন্ন দ্রব্যের বাজার তৈরি করবে।

বাংলা ভাষায় শিক্ষা ছিলো। ইংরেজরা বাংলা দখল না করলে ধীরে ধীরে মাতৃভাষা উচ্চশিক্ষা আরম্ভ হতো। কিন্তু ইংরেজ শাসনে কী হয়েছে? সকলকে তারা শিক্ষিত করতে চায়নি বলে সাক্ষরতার হার ভয়াবহভাবে কমে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে ইংরেজদের চালু করা প্রাথমিক শিক্ষার আর একটি কুফল হলো ‘গৃহ শিক্ষক’ প্রথা এবং হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ে বিভক্ত হওয়া। কারণ ইংরেজদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কজন ছাত্র হিন্দু আর কজন ছাত্র মুসলমান বা খ্রিষ্টান তা লিখতে হতো। বাংলার পাঠশালা শিক্ষায় তার দরকার ছিলো না। বাংলাদেশে যে বর্তমানে সাক্ষরতা বাড়াবার জন্য অনানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়েছে, তা পুরানো পাঠশালা শিক্ষারই আর একটি রূপ। মানুষের সাক্ষরতা লাভটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষরতা লাভ করলে একজন মানুষ পরে নিজে নিজে বইপত্র পাঠ করে বিরাট জ্ঞানী হয়ে উঠতে পারেন। তার প্রমাণ আরজ আলী মতুব্বর। প্রমাণ রবীন্দ্রনাথ আর তার বোনেরা। যারা সাক্ষরতা লাভ করার মধ্য দিয়েই বিরাট বিপ্লব সাধন করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দিদি স্বর্ণকুমারী ভারতী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, তিনি প্রথম নারী যিনি আলোচিত উপন্যাস লিখেছিলেন। তাঁর প্রাথমিক পড়াশুনা ছিলো ঘরে বসে সাক্ষরতা লাভ। সে সময়ের বহু নারী ঘরে বসে সাক্ষর জ্ঞান লাভ করেই শিক্ষা সাহিত্যের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছিলেন।

** এবিষয়ে লেখকের একটি দীর্ঘ বিস্তারিত লেখা থেকে সারসংক্ষেপ এখানে দেয়া হয়েছে। – সম্পাদক

লেখক পরিচিতি:
রাহমান চৌধুরী, লেখক, শিল্প সমালোচক
Raahman Chowdhury

 

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.