রাজধানীর ডেমরায় ডগাইর এলাকায় একটি মসজিদের ভেতর থেকে মনির হোসেন (১০) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৯, বিকালে ডগাইর নতুনপাড়ার নুর-ই-আয়েশা জামে মসজিদের তিন তলা উঠার সিঁড়িতে শিশুটি লাশ উদ্ধার করা হয়।

শিশু মনির হোসেন
ঘটনার একদিন পরে মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৯, সন্ধ্যায় ডেমরা থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন যে খবর পেয়ে সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ মসজিদ থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে মনির হোসেনের পিতা সাইদুল হক মঙ্গলবার ৩ জনকে আসামী করে ডেমরা থানায় একটা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ৩ জন হচ্ছে মসজিদের ইমাম আব্দুল জলিল হাদী (৪২), গত বছর এই মসজিদে তারাবীর নামাজের ইমাম আকরাম হোসেন (২৪), এবং মাদ্রাসার ছাত্র আহম্মদ শফি তোহা (১৪) । ইতোমধ্যে ইমাম আব্দুল জলিল হাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মনিরকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছে পুলিশ। আব্দুল জলিল হাদীর স্বীকারোক্তি অনুসারে অপর দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

অভিযুক্ত ইমাম আব্দুল জলিল হাদী
মনির ডেমরা ডগাইর এলাকাতে পিতামাতার সাথে বাস করত। তার পিতার নাম সাইদুল হক, যার পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায়।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুসারে, প্রতিদিনের মত রোববার, ৭ এপ্রিল, ২০১৯, দুপুরে মুনির হোসেন মসজিদের মক্তবে পড়তে যায়। মক্তব ছুটি হবার পরেও মনির ফিরে না আসায় খোঁজ শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। মনিরের পরিবার বিকালে একটি ফোন পায়, ফোনে এক ব্যাক্তি মনিরের সন্ধানের বিনিময়ে ৩ লক্ষ টাকা দাবী করে। সন্ধ্যার মধ্যে মসজিদের খাটিয়ায় টাকা রেখে না এলে সকালে ছেলের লাশ পাবে বলে হুমকি দেয় ঐ ব্যক্তি। মনিরের দরিদ্র পিতা মাতা কোন মতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা যোগাড় করে সময়মত মসজিদের খাটিয়া উপর রেখে আসে কিন্তু সকালে সন্তান আর বাসায় ফিরে আসেনি।

মনির হোসেনের মরদেহ উদ্ধার
ইতোমধ্যে স্থানীয়দের কাছে টাকা দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে সবার সন্দেহ হয় মসজিদের ইমামের উপর। এলাকাবাসী দুপুরে ডেমরা পুলিশকে জানায়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইমামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তখন ইমাম দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে ধরে ফেলে এবং সে স্বীকার করে যে শিশুটি তার কাছে আছে। পরে ইমামের কথা মত পুলিশ মসজিদের ৩য় তলার সিড়ির নিচে বস্তা বন্দি শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে শিশুটির গলা কাটা অবস্থায় পা দুটো তার বাঁধা ছিল।
হত্যাকাণ্ডের কারণ অর্থ আদায় বলে জানান, ডেমরা থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান। মরদেহ পোষ্টমর্টেমের জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাঙালীয়ানা/এসএল