‘মহাগুরু’ পিকে-র প্রস্থান

Comments

বাষট্টিতে জাকার্তা এশিয়ান গেমসের সোনাজয়ী দলের হয়ে সে ব্লেজার পরেই শেষ যাত্রে করেন প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের প্রিয় পিকে ব্যানার্জী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, দুই মেয়ে পলা ও পিক্সিসহ অসংখ্য সাথী ও ভক্ত।

শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০ দুপুর দুটোর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, কিংবদন্তির প্রয়াণ ঘটেছে। মৃত্যুকালে পিকে ব্যানার্জির বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে, সে জন্য রাজ্য সরকার কোথাও সাধারণের দেখার জন্য মরদেহ রাখার ব্যবস্থা করেনি। শুক্রবার কলকাতা সময় রাত্রি সাড়ে নটা নাগাদ নিমতলা ঘাট মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হলো ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তী প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শেষকৃত্যের আগে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘গান স্যালুটে’ শ্রদ্ধা জানানো হয় ভারতীয় ফুটবলের মুকুটহীন সম্রাটকে।
করোনা-আতঙ্কের প্রকোপে একরকম নিঃশব্দেই অমৃতলোকে পাড়ি দিলেন বিংশ শতাব্দীর চিরশ্রেষ্ঠ ভারতীয় ফুটবলার। থাকল না বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগানের তাঁবুতে ‘মহাগুরু’র মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা অর্পণ করতে পারলেন না তাঁর অগণিত ভক্ত-অনুরাগীরা।

৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ থেকে দক্ষিণ কোলকাতার বাইপাস এলাকার একটি হাসপাতালে ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮৩ বছরের পিকে ব্যানার্জী নামে অধিক খ্যাত প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।  এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থা কখনও ভাল তো কখনও মন্দ। ২ মার্চ ২০২০ বিকেল থেকে শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় ভারতের স্বনামখ্যাত ফুটবলার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের একটি প্যানেল তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। লাইফ সাপোর্ট পাওয়ার পর পিকে সেই চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন বলেও জানানো হয়েছে।

ফুটবলার জীবনে বড় ক্লাবের হয়ে কোনওদিন খেলেননি তিনি। ইস্টার্ন রেলের হয়ে খেলতেন। ১৯৫৮ সালে কলকাতা লিগ জিতেছিল ইস্টার্ন রেল। সেই চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন পিকে। ক্লাব পর্যায়ে যেমন সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি, ভারতের জাতীয় দলের জার্সিতেও তিনি দারুণ সফল।

১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন পিকে। সেবার তারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ভারত কোয়ার্টার ফাইনালে ৪-২ গোলে হারায় অস্ট্রেলিয়াকে। ১৯৬০ সালের রোম অলিম্পিক্সে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তার গোলেই সমতা ফিরিয়েছিল ভারত। ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৬৬ সালের এশিয়ান গেমসে ভারতের জার্সি পরে খেলেছিলেন পদ্মশ্রী পিকে ব্যানার্জী।

১৯৬২ সালের জার্কার্তা এশিয়ান গেমসে ভারত সোনা জিতেছিল। কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত মারডেকা কাপে ভারতের হয়ে তিনবার প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ২০০৪ সালে তাকে অর্ডার অফ মেরিট প্রদান করে ফিফা।

বাঙালীয়ানা/এসএল

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.