মালয়েশিয়ায় অবৈধদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু নিয়ে আতঙ্কে প্রবাসীরা। নামমাত্র জরিমানা দিয়ে মালয়েশিয়া থেকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরার মেয়াদ বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, শেষ হয়েছে। শুক্রবার থেকে মালয়েশিয়াজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে সাড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে।

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় সাড়াশি অভিযান(সংগৃহীত ছবি)

২০১৪ সাল থেকে মালয়েশিয়া সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় নামমাত্র জরিমানা দিয়ে অবৈধ অভিবাসীরা দেশে ফেরার সুযোগ পাচ্ছে, এখন পর্যন্ত আট লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছে। তবে মালয়েশিয়া সরকার সাধারণ ক্ষমার সময়সীমা ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বেঁধে দেয়।

সংবাদ সংস্থাগুলো জানাচ্ছে, জাতীয়ভাবে পরিচালিত এই অভিযানে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও নেপালের মতো দেশগুলোর শ্রমিকরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এদিকে অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এমন অভিযানে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিরা এবং কাগজপত্র ছাড়া শ্রমিকরা হয়রানির শিকার হতে পারে।

বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে ওই ডেডলাইন শেষ হয়। তবে এই সময় বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সাধারণ ক্ষমার সময়সীমা বৃদ্ধি করা হবে না। শুক্রবার থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান শুরু হবে।

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় সাড়াশি অভিযান(সংগৃহীত ছবি)

মালয়েশিয়া সরকারের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে ১৭ লাখ বৈধ শ্রমিক রয়েছে। তারা বলছে, আরও প্রায় ১০ লাখের বেশি অভিবাসী দেশটিতে অবৈধভাবে কাজ করছে। সরকার মাঝে মধ্যেই এই অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। চলতি বছরের শুরু থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ নয় হাজারের বেশি অভিযান চালিয়েছে।

অধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের অভিযানে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আর হয়রানির শিকার হবে বৈধ কাগজপত্র থাকা অভিবাসীরাও।

কুয়ালালামপুরভিত্তিক অভিবাসী অধিকার গ্রুপ তেনাগানিতার পরিচালক অ্যাজিল ফার্নান্দেজ বলেছেন, সরকার তাদের ভুক্তভোগী হিসেবে নয় বরং অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করে, এটি অন্যায়।

তিনি বলেন, সরকার কেন অভিবাসীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে যখন মালয়েশিয়ার জন্য তাদের অবদান অনেক? অপরাধীদের কেন ধরা হচ্ছে না?

মালয়েশিয়ার সরকার চলতি বছরের শুরুর দিকে ঘোষণা দিয়েছে যে তারা মানব পাচাররোধে একটি বিশেষ আদালত গঠন করবে।

জাকার্তাভিত্তিক হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ওয়াচের দেউয়ি খলিফা এই অভিযান বন্ধ করে মানব পাচারকারী ও চাকরিদাতাদের টার্গেট করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শ্রমিকরা অপরাধী নয়। মালয়েশিয়া সরকারের উচিত সেইসব চাকরিদাতাদের গ্রেপ্তার করা যারা আইন না মেনে শ্রমিক নিয়োগ দেয়।

গৃহকর্মী এবং শ্রমিকদের জন্য বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও নেপালের জনশক্তির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল মালয়েশিয়া। কিন্তু মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের অভিযানে প্রায়ই বাংলাদেশি, ইন্দোনেশিয় ও বার্মিজ শ্রমিকরা আটক হন। দেশটিতে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের পর জেল, বেত্রাঘাত এবং দেশের ফেরত পাঠানোর মতো বিষয় ঘটে।

বাঙালীয়ানা/এজে

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.