বিদেশে পণ্য রপ্তানিতে রপ্তানিমূল্যের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার কমিয়েছে সরকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে এটি ১ শতাংশ থেকে দশমিক ৪০ কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮,  অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়।

পোশাকশিল্প খাতেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে আরেকটি গেজেট প্রকাশিত হয়। সেখানে তৈরি পোশাক খাতের পণ্য রপ্তানি থেকে আয়কর হার সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ চলতি অর্থবছরেও (২০১৮-১৯) বহাল রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেট’ প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এ হার ১০ শতাংশ রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৫৩ বিবি ও ৫৩ বিবিবিবিতে যেসব পণ্যের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোয় রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের ওপর ১ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন বাধ্যতামূলক ছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য পাটজাত দ্রব্য ছাড়া সব পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার কমিয়ে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি গেজেটও জারি করেছিল যার মেয়াদ গত জুন মাসে শেষ হয়েছে। অতঃপর ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে একই উৎসে করের হার কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬০ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৮, গেজেটের মাধ্যমে এই হার কমানো হয় যা পাটজাত পণ্য বাদে সব পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। কারণ, পাট ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি এসআরও-এর মাধ্যমে রপ্তানিমূল্যের ওপর উৎসে কর শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিলো।

উল্লেখ্য, গত অর্থবছরেও নিটওয়্যার ও ওভেন গার্মেন্টস উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানি আয়ের ওপর আয়কর হারে ছাড় পেয়েছিল ব্যবসায়ীরা। কোম্পানি করদাতার ক্ষেত্রে আয়করের হার ১২ শতাংশ। যদিও, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন’ প্রাপ্ত কারখানার উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি থেকে উপার্জিত আয়ের ওপর আয়কর হার ১০ শতাংশ ধার্য করা ছিলো। কিন্তু এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য প্রযোজ্য থাকায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এটি কার্যকর হয়নি। তাই এই সুবিধা আবারও বহাল রেখে নতুন গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘সরকারের এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমাদের তৈরি পোশাক খাত এখন বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ইউরোপ-আমেরিকাতে অন্য সবকিছুর দাম বাড়লেও তৈরি পোশাকের দাম বাড়ছে না। আপনারা জানেন, লোকসানে পড়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ কারখানা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা উৎসে কর কমানোর জন্য সরকারকে অনুরোধ করছিলাম। সরকার কমিয়েছে। অবশ্য আমরা আরও কমানোর কথা বলেছিলাম। তবে এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’

বাঙ্গালীয়ানা/এএ

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.