প্রেস ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক সাংবাদিক মো.শাহ আলমগীর চলে গেলেন। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, সকাল ১০টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন বলে পারিবারিকসূত্রে জানা যায়। মৃত্যুকালে শাহ আলমগীরের বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
ডায়াবেটিসসহ বিবিধ শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। হঠাৎ তার রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় ২১ ফেব্রুয়ারী রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সিএমএইচে ভর্তি হন পিআইবির মহাপরিচালক। পরদিন তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসার জন্য ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
পিআইবি সূত্রে জানা গেছে, বেলা দুইটার দিকে শাহ আলমগীরের লাশ গোড়ানে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে পিআইবিতে আড়াইটায় এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৩টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে উত্তরার শাহ আলমগীরের বাসভবনে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে তার লাশ দাফন করা হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা শাহ আলমগীর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই পিআইবির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬, চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫ সহ বেশকিছু সম্মাননা পেয়েছেন।
প্রায় ৪০ বছর সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শাহ আলমগীর। উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর পত্রিকা সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় ১৯৮০ সালে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ ও সংবাদ পত্রিকায়। ১৯৯৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যুগ্ম বার্তা-সম্পাদক হিসেবে প্রথম আলোতে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে নানা সময়ে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শাহ আলমগীরের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে হলেও বাবার চাকরি সূত্রে বৃহত্তর ময়মনসিংহে জীবনের দীর্ঘ একটি সময় কাটে তার। ময়মনসিংহের গৌরীপুর কলেজ থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। পারিবারিক জীবনে শাহ আলমগীর এক পুত্র ও কন্যা সন্তানের জনক।
শাহ আলমগীরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বাঙালীয়ানা/এসএল