বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথের চর্চার উপর বই খুঁজতে গিয়ে অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহার একটি বই খুঁজে পেলাম পাবলিক লাইব্রেরিতে “ফিরে দেখা: রবীন্দ্রনাথ”। বইটির প্রথম প্রবন্ধটির কয়েকপাতা উল্টাতেই একটি পেরায় চোখ আটকে গেল। ষাটের দশকে পাকিস্তানীদের কর্তৃক রবীন্দ্রনাথ নিষিদ্ধ হলে এই ভূখন্ডে রবীন্দ্রনাথকে ফিরে পাওয়ার জন্য যে প্রবল বুদ্ধিভিত্তিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন হয়েছিল তার উপর লেখা। এই হুকুম তারা মেনে নিতে অস্বীকার করে। উল্টো প্রবলতর আগ্রহে এবং আক্রোশেও রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া-শোনা এবং নানাদিক থেকে রবীন্দ্রচর্চা তাদের মননের ও পিপাসিত চিত্তের পরিতৃপ্তির এক আবশ্যিক বিষয় হয়ে ওঠে। ক্ষমতার দখলদার শক্তি পিছু হটতে বাধ্য হয়। এখানেও মুক্ত আলোকে রবীন্দ্রনাথের দিকে আমরা মুখ ভুলে তাকাই। গানে-কবিতায় তাঁকে অবলম্বন করে নিজেদের জড়ত্ব নাশে সচেষ্ট হই।
চেতনায় মুক্তির স্বাদ খুঁজি। ছায়ানটের আবির্ভাব এই সময়েই। বুলবুল ললিতকলা একাডেমী ও রবীন্দ্রনাথের গানে ও নৃত্যনাট্যে প্রাণের হিল্লোল বইয়ে দেয়। ঘরের ভিতরে তা রুদ্ধ থাকে না। প্রাণ থেকে প্রাণে তারা মুক্তির ও প্রেমের আনন্দময় উপলব্ধি ছড়ায়। হায়াৎ মাহমুদের রবীন্দ্র-কিশোর জীবনী ছেপে বেরোয় এই দশকে। অসাধারণ জীবনীগ্রন্থ। জনপ্রিয় কোন উপন্যাসের চেয়েও তার চাহিদা তখন বেশি। শামসুর রাহমান কবিতা লিখেছেন রবীন্দ্রনাথের গান শুনে, প্রবন্ধ লিখছেন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। নিরলস গাই গাইছেন সনজীদা ও ফাহমিদা খাতুন। গাইছেন জাহেদুর রহীম, অজিত রায়, হামিদা আতিক, আঁখি চক্রবর্তী ও আরো অনেকে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওয়াহিদুল হক, কলিম সারাফি-এঁরা। প্রবন্ধের সুচনায় বইটির পুরো প্যারা তুলে দিলাম চোখ আটকে যাওয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে। আটকে যাওয়ার কারণ ‘অজিত রায়’ নামটি দেখে। নামটি বহুবার শুনেছি তাঁর সুযোগ্য তনয়া শিল্পী শ্রেয়সী রায় এবং জামাতা ভাস্কর শিল্পী প্রদ্যোৎ মজুমদারের কাছে। দুইজনের সাথেই বেশ কিছু কাল ধরেই একধরনের আত্মিক সম্পর্ক বিদ্যমান। তাতে সুবিধা হল অজিত রায় প্রতিষ্ঠিত সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গন’ এর বিভিন্ন অনুষ্ঠানগুলোতে কখনো আমন্ত্রিত হয়ে
কখনো উপযাজক হয়ে উপস্থিত থাকার সুযোগ ঘটে। সুযোগ ঘটে তাঁদের বাড়িতে যে গানের আসর কিংবা মুড়ি মাখা লাল চায়ের আড্ডা তাতে উপস্থিত থাকার। সেই আড্ডার ফাঁকে ফাঁকেই শ্রেয়সী রায় বাবা অজিত রায়ের কথা বলে ওঠেন। তাঁর সুর করা গান শোনান। আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন আমার পৃথিবী মানেই বাবা! আমি ইচড়ে পাকা মনে মনে ধরেই নিই নিজের বাপ বলেই হয়ত বাড়িয়ে বলেন। উল্লেখিত প্রবন্ধটিকে তাই অজিত রায় নাম দেখে নিজের পাকামির প্রতি চোখ রাঙিয়ে বিস্মিত হয়ে জানার চেষ্টা করলাম এত কাছ থেকে দেখা মানুষটা সম্পর্কে।
অজিত রায় জন্মেছেন দেশের প্রান্তিক শহর রংপুরে ১৯৩৮ সালের ২৯ জুন। মহকুমা শহরে জন্মেছিলেন বলেই হয়ত ধমনীতে স্বদেশের প্রতি আলাদা টান ছিল। প্রথম যৌবনেই ঢাকায় চলে আসেন আর সাথে নিয়ে আসেন তার অকৃত্রিম দরাজ কণ্ঠ। গাইতে শুরু করেন যেমনটি অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা’র লেখায় আছে। কি গাইছেন? রবীন্দ্রনাথের গান। কোথায় গাইছেন? গাইছেন প্রায় সকল জায়গায় হাটে, মাঠে, রাজনৈতিক জনসভায়, সাংস্কৃতিক আন্দোলনে। কেন গাইছেন? গাইছেন এই জন্য যে ওই স্বদেশের প্রতি টান। ষাটের দশকেই নিজেকে দ্রোহ চেতনায় ঋদ্ধ করেন অজিত রায়। না করে উপায় ছিল না তাঁর। কেননা গাইতে হবে তো, বাধা ছিলোই। ছিলো বলেই বন্ধু জাহেদুর রহিমকে সাথি করে অবিরাম গেয়ে চলেছেন রবীন্দ্রনাথের গান। শুধু কি গানই গেয়েছেন? না তেমন হওয়ার উপায় ছিল না। গান তখন হাতিয়ার, বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথের গান। পুরো ষাট ও সত্তর দশক জুড়ে এই ভূ-খন্ডে তো আন্দোলন দানা বেঁধেছে। যত সভা সমিতি হয়েছে তাতে সবিশেষ থাকত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর তাতেই ডাক পড়ত ‘দরাজ কণ্ঠ’ অজিত রায়ের।
যেহেতু রাজনৈতিক সভাতেও গাইবার ডাক পড়ত তাতে অনিবার্য ছিল বঙ্গবন্ধুর চোখে পড়ার, পড়েছেনও। তাঁকে বঙ্গবন্ধু ডাকতেন ‘রায় বাহাদুর’ বলে এবং ওই ষাটের দশকে শুরুতেই যেখানে বঙ্গবন্ধু ধীরে ধীরে পথ করে নিচ্ছিলেন স্বাধীনতার। সেই অভিষ্টের পথে তিনি প্রথম প্রকাশ খুঁজে নিয়েছিলেন ওই রবীন্দ্রনাথ থেকেই। তাই অজিত রায়ের প্রতি প্রায় অনুরোধ কিংবা আদেশ থাকত একটি বিশেষ গান গাইবার। কি সেই গান? ‘আমার সোনার বাংলা’ যেখানেই শেখ মুজিব ভাষণ দিচ্ছেন সেখানে অজিত রায় আমার সোনার বাংলা গাইছেন।
ওই দ্রোহ চেতনায় ঋদ্ধ হওয়া, তার থেকে ফেরত আসার উপায় ছিল না। দ্রোহ পরিণত হলো লড়াইয়ে। মুক্তির লড়াই। তাতে অজিত রায় কি করলেন? করলেন এই, ওই কণ্ঠকেই হাতিয়ার বানালেন। যোগ দিলেন স্বাধীন বাংলা বেতারে। এতকাল রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়া মানুষটা মুহূর্তেই বাঁক ফেরালেন। এবার গণসংগীত। একের পর এক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। সুর করেছেন। এই যে সুর করছেন তাতে জন্ম নিল অনেক গুলো কালজয়ী গানের। তারই একটি ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতা’। কিংবা আখতার হোসেনের ‘স্বাধীন স্বাধীন’।
অতি সম্প্রতি তার ৮০তম জন্মজয়ন্তী পালনের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা। এই অধমের সুযোগ ঘটে সেই অনুষ্ঠানে থাকার। তাতে অতিথি ছিলেন শব্দসৈনিক কামাল লোহানী। শিল্পকলার মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। লাকি ভাই আলোচনা শুরুতেই যেটা শোনালেন তা হলো তখন খুব কোরাস গান গাওয়া হত। আর সমস্ত কোরাস গানগুলোই লীড দিতেন অজিত রায়। তাঁর ভাষাতে বাংলাদেশে আর কোন শিল্পী এই কাজ করেননি, পারেননি। বুঝলাম অজিত রায়ের নেতৃত্ব গুণ ছিল। তা না হলে আজকের আধুনিক শব্দযন্ত্র ছাড়াই একাধিক শিল্পী নিয়ে কখনো মাইকে কখনো খালি গলায় গানে লীড দেওয়া নেতৃত্ব গুণ ছাড়া প্রায় অসম্ভব।
শ্রদ্ধেয় কামাল লোহানী তাঁর কথামালায় থেকে থেকেই ডুকরে উঠছিলেন। বাকরুদ্ধ হচ্ছিলেন বার বার । তাঁর বর্ণনা শুনে কল্পনায় দেখতে পেলাম এক অনন্য সাধারণ মুহূর্ত। ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বর। বিকেলে রেসকোর্সে আত্মসমর্পণ করবে দখলদার পাকিস্তানী বাহিনী। অনতিদূরে কলকাতায় স্বাধীন বাংলার বেতার কেন্দ্র তখন অসাধারণ এক সৃজন মুহূর্ত। একটি নতুন গান লিখা হচ্ছে, সাথে সাথে সুর হচ্ছে, একই সাথে গাওয়া হচ্ছে বিজয়ের গান।
কালাম লোহানীর ভাষায়, ‘দুই লাইন লিখছেন শহিদুর রহমান, সেই দু’লাইনে সুর দিচ্ছেন সুজেয় শ্যাম, সাথে সাথে তাতে কণ্ঠ দিচ্ছেন অজিত রায়। মুহূর্ত কালের মাঝেই রচিত হল বিজয়ী জাতির প্রথম গান আর তাতে কণ্ঠ দিলেন অজিত রায় – বিজয় নিশান উড়ছে ওই, উড়ছে ঘরে ঘরে’।
কামাল লোহানী যদিও অস্ফুটে কান্না চাপা গিয়েছিলেন। মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর তার ধারে কাছে গেলেন না। কেঁদেই দিলেন। কাঁদালেন শ্রোতাদেরও। জানালেন মাসে দুইদিন নীলফামারিতে আসতেন অজিত রায়। থাকতেন তাঁদের বাড়িতে। সন্ধ্যায় হারমোনিয়াম নিয়ে বসতেন। শেষ হতো কখনো মধ্যরাতে কখনো ভোর রাতে। একদিন ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’ গানটি গাওয়া শেষ করে নূরকে জিজ্ঞাসা করলেন রবীন্দ্রনাথ এই গানটা শুনেছ। এই গানে কিন্তু কোন অন্তমিল নেই। নূর জানালেন সেই প্রথম শুধু গান শোনা নয় গান আবিস্কার করতে শিখিয়েছেন অজিত রায়।
ঠিক তাই – অজিত রায় গানই আবিস্কার করতেন। স্বাধীনতার পরে ’৭২ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ বেতারে। মুখ্য সংগীত প্রযোজক হিসেবে। সেই সময়ে তাঁর সুরে, নির্দেশনায় দেশের প্রায় সব খ্যাতিমান শিল্পীরা কণ্ঠ দিয়েছেন। এই সময়ে অজিত রায় আরেকবার বাঁক পরিবর্তন করেন। কবিতাকে তুলে আনেন গানের ভাষা হিসেবে। ওই যে বলেছিলেন রংপুরে জন্ম। গ্রাম বাংলার সেই শাশ্বত রূপ দেখে বড় হয়েছেন। সেই রূপের সন্ধানে বৃত হলেন জীবনানন্দের কবিতায়। জীবনানন্দ অবশ্যই চিত্রের কবি। সেই চিত্রের মধ্যে বাংলাদেশই প্রধান। সেই চিত্রের অনন্য রূপ মুগ্ধতায় তিনি একে একে গাইলেন জীবনানন্দের ‘আবার আসিব ফিরে’ ‘বনলতা সেন’। অবশ্য স্বাধীন বাংলা বেতারের জন্যে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালেই সুর দিয়ে গেয়েছিলেন জীবনানন্দের রূপ “বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি”।
এইখানেই শেষ নয়। শেষ হওয়ার উপায়ও ছিল না। কবিতায় সুর সংযোজন করা তখন অজিত রায়কে পেয়ে বসেছে।
যৌবনে সে স্বদেশিকতার প্রেমে পড়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় খুঁজে নিলেন মাইকেল। সুর দিলেন ‘সতত হে নদ তুমি পড় মোর মনে’, ‘হে বঙ্গ ভান্ডারে তব বিবিধ রতন’, কবিতায় ঘোর লাগা মানুষটি তখন কবিতার পর কবিতায় সুর দিয়ে চলেছেন – শামসুর রাহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’, কায়কোবাদের ‘বাংলা আবার’, সিকান্দার আবু জাফর সিদ্দিকীর ‘২১ ফেব্রুয়ারী’, নজরুলের ‘ধুমকেতু’, রবীন্দ্রনাথের ‘১৪০০ সাল’, অসংখ্য সুরের গানগুলোতে কণ্ঠ দিলেন সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, এন্ড্রু কিশোর, সুবীর নন্দী, শাকিলা জাফর, রফিকুল আলম, শাম্মী আখতার, আবিদা সুলতানা, খুরশিদ আলম প্রমুখ খ্যাতিমান শিল্পীবৃন্দ।
এই যে বাঁক পেরিয়ে কবিতায় বুঁদ হলেন তখন কি রবীন্দ্রনাথ ভুলে ছিলেন? না রবীন্দ্রনাথকে ভোলেননি। যোগ দিলেন ‘ছায়ানটে’ শিক্ষক হিসেবে। শিখাতেন রবীন্দ্র সংগীত। অসংখ্য ছাত্র তার বর্তমানে খ্যাতিমান। এই সময়ে গঠন করলেন নিজের সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গন’। ১৯৯০ সালে ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ)-এ। ব্রতী হলেন নতুনদের রবীন্দ্রনানের গানে আকৃষ্ট করতে। সাথে সাথে নিজের সৃষ্ট সুরের গান আর গণসংগীতের তালিম দিতেন। সেই যে ষাটের দশক থেকে অবিরাম গেয়েছিলেন ‘আমার সোনার বাংলা’, স্বাধীন দেশে তাঁর উপরেই ভার পড়ল জাতীয় সংগীত হিসেবে গানটিকে শুদ্ধভাবে প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। শিল্পকলা একাডেমির এই প্রকল্পে অজিত রায় বিনা পারিশ্রমিকে শিখাতেন শুদ্ধ জাতীয় সংগীত।
যৌবনের শুরুতেই যে লড়াইয়ে ব্যাপ্ত করেছিলেন নিজেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তা থেকে বিচ্যুত হননি। ফলে দেশের ক্রান্তিকালে, গণ আন্দোলনে, স্বৈরাচার বিরোধিতায় অজিত রায় উপস্থিত হতেন তাঁর কণ্ঠ হাতিয়ার নিয়ে। নির্ভয় আর নিঃশঙ্ক ছিলেন তিনি এই কাজে। বিচ্যুত হননি কখনোই।
আচ্ছা এই লড়াইয়ের মানুষটি কি শুধু লড়াই করেছেন? রোমান্টিক ছিলেন না? ছিলেন বৈকি। ছিলেন বলেই অসম্ভব সুন্দর করে গান বাঁধলেন ‘ওই চক চকে কালো চুলে’ সুকান্তের ‘প্রিয়তমাসু’। ‘সুখ তুমি কি’, ‘তুমি আছ বলে জীবনে আমার’ এরকম আরো অসংখ্য রোমান্টিক গানের সুর দিলেন। লোভের হাতছানিকে উপেক্ষা করেছেন বারবার। টলাতে পারেন তাকে কোন প্রলোভনে। আজন্ম লালন করেছেন শাশ্বত এক সৌন্দর্য। বঙ্গবন্ধুর প্রয়াণ তাঁকে ব্যাথিত করেছিল। মর্মাহত হয়েছিলেন অজিত রায়। কিন্তু দমে যাননি। সম্মুখের লড়াই থেকে পিছু হটেননি। সুর আর গানেই জারী রেখেছিলেন তার
দ্রোহ চেতনা।
এই দেশে জীবদ্দশাই গুণী-জনেরা তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পান না। সেইদিক থেকে অজিত রায় সৌভাগ্যবান। দেশ তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করেছে ২০০০ স্বাধীনতা পদক প্রদান করে। আজীবন রবীন্দ্রলালিত অজিত রায় ২০১১ সালে সারা পৃথিবীব্যাপী যে পালিত হলো রবীন্দ্রসার্ধশত তার ধারাবাহিকতায় বাংলা একাডেমি তাঁকে প্রদান করে রবীন্দ্র পদক। ভারতের তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি হাত থেকে গ্রহণ করেছিলেন এই বিরল সম্মান। জীবনব্যাপী সব সময়েই রবীন্দ্রনাথকে পাথেয় করেছিলেন। তাই অন্তিম বিদায় মুহূর্তে ওই রবীন্দ্রনাথকেই সাথি করেছিলেন। তাঁকে শেষ দেখতে যাওয়া সতীর্থ অনুগামীদের তিনি সহাস্যে বলেছিলেন ‘জগতের আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ’। ২০১১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিদায় নিলেন এই মহান সুরস্রষ্টা। তাঁর সুরে একটি অনন্য সাধারণ গান ‘জানি ফাগুন ফুরিয়ে গেলে পলাশের রঙ মুছে যায়’। অজিত রায় মুছে যাবেন না, বেঁচে থাকবেন তাঁর অপার সৃষ্টির মাঝে। কেননা ফাগুন এবং পলাশ ফিরে ফিরে আসে এই বাংলায়।
লেখক:
অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য