ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনায় করা মামলায় নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮ ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম এমদাদুল হক তাকে এই অব্যাহতি দেন।
সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি দিয়ে মামলার অপর আসামি অপুর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশও দেয়া হয়। দুই পক্ষের শুনানিতে আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে জনগণের রোষ থেকে বাঁচানোর জন্য তাকে লাঞ্ছনা করতে বাধ্য হয়েছিলেন সেলিম ওসমান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার কোনো উপাদান নেই উল্লেখ করে অব্যাহতির আবেদন জানান আইনজীবী।
এই আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, উক্ত অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় সেলিম ওসমান এবং অপুর বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল প্রতিবেদন দেওয়া হয়। অভিযোগ গঠনের মতো সুনির্দিষ্ট উপাদান রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি দিয়ে অপর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান সবার সামনে ওই শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করান। এর একপর্যায়ে শ্যামল কান্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ২০ মে পুলিশি প্রহরায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সাংসদ সেলিম ওসমানের কঠোর সমালোচনা করেন।
পরে এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ১৪ মে সেলিম ওসমান আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। পরে ঐ বছরের ১০ আগস্ট এ ঘটনায় সেলিম ওসমান জড়িত কি না-সে বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন : টিজিং এর অভিযোগে কোটা আন্দোলনের দুই নেতাকে মারধর
আরও পড়ুন : ঘ ইউনিটের পরীক্ষা আবার হবে
বাঙালীয়ানা/এমএ/জেএইচ