আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন তারিখ ঠিক করেছে নির্বাচন। সব কিছু ঠিক থাকলে ৩০ ডিসেম্বরই অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এমনটাই সাফ জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। এরইমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোতে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। কিছুদিনের মধ্যে চলে আসবে বিভিন্ন আসন থেকে কারা লড়বেন আসন্ন নির্বাচনে সেই তালিকাও।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মত বড় দলগুলো তাদের নির্বাচনী কৌশলে সামিল করেছে অন্য আরও অনেক দলকে। সাজিয়েছে বিভিন্ন রকম জোট। একই ভাবে থেমে নেই গণতান্ত্রিক বাম জোটও। বড় দলগুলোর সাথে নিজেদের না ভিড়িয়ে, তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি চিন্তায় রাখছে ইশতেহার। গণতান্ত্রিক বাম জোটে ৮টি বাম-গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল ঘরানার রাজনৈতিক দল আছে। গত ১৮ জুলাই ৮ দলের সমন্বয়ে গঠিত এ জোটের দলগুলো হচ্ছে—বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।
জানা যায়, ইশতেহারে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র ক্ষমতা নিরসনে সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়টি থাকার পাশাপাশি দেশের জাতীয় সম্পদরক্ষার নিশ্চয়তার ব্যাপারটি গুরুত্ব পাবে। আরও জানা যায়, ইশতেহারে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর পরিস্থিতি বর্ণনা ও সমাধানের প্রতিশ্রুতি থাকবে। ইশতেহারের ওপর একটি বুকলেট ও সংক্ষিপ্তাসার দিয়ে একটি লিফলেট করা হবে।
তাছাড়া, এই জোটের পক্ষ থেকে একটি ইশতেহার কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যাতে জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক ছাড়াও আছেন বজলুর রশীদ ফিরোজ, ফিরোজ আহমেদ, ফখরুদ্দিন কবীর আতিক, শাহ আলম ও অধ্যাপক আবদুস সাত্তার। সোমবার, ১৯ নভেম্বর জোটের ইশতেহার কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথাও রয়েছে। জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা এখনও ইশতেহার নিয়ে বসিনি। প্রাথমিকভাবে চিন্তা করছি। প্রত্যেকেই তাদের দলীয় চিন্তার সমন্বয় করে কমিটিতে বসবেন।’
বাম গণতান্ত্রিক জোটের ইশতেহারে বড় চমক থাকবে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমাতার বিকেন্দ্রীকরণে সাংবিধানিক সংস্কার। তাছাড়া, ডিজিটাল আইন বাতিল, রাজনৈতিক গ্রেফতার ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধে আইনের সংস্কারের কথা বলা হবে। অর্থনৈতিক বিষয়ে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ, অব্যবস্থাপনা, নৈরাজ্যবন্ধ, ব্যাংকচুরি, অযাচিত ঋণবন্ধসহ নানা বিষয়ে প্রতিশ্রুতি ও সমাধানের চিন্তা দেওয়া থাকবে ইশতেহারে। স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করণে প্রতিশ্রুতি দেবে বাম জোট। প্রত্যেক প্রতিশ্রুতি সমাধানে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সময় ধরে উদ্যোগ গ্রহনের কথা বলা থাকবে।
খাতওয়ারী সমাধানের পথে প্রাধান্য পাবে শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা, খেলাধুলা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, শ্রমিক-অধিকার, যোগাযোগসহ আরও কিছু বিষয়। তাছাড়া, জাতীয় সম্পদ রক্ষা করার পাশাপাশি দেশ বিরোধী চুক্তিগুলো বাতিলের কথা বলেছেন নেতারা। এই বিষয়ে সাইফুল হক বলেন, ‘দেশের স্বার্থবিরোধী যেসব চুক্তি আছে, বিশেষ করে সৌদি আরবের সঙ্গে, ভারতের সঙ্গে সুন্দরবন চুক্তি—এসব বাতিল করার প্রতিশ্রুতি থাকবে ইশতেহারে। জাতীয় সম্পদ তেল-গ্যাসের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিয়ে ইশতেহারে বক্তব্য থাকবে।’ রূপপুর ও রামপাল চুক্তি বাতিলের বিষয়টিও ইশতেহারে রাখা হবে। দেশের জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবহার নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখা হবে ইশতেহারে।
বাঙালীয়ানা/জেএইচ