হাসপাতালে মাশরাফি ঝড়: ওএসডি ৪ চিকিৎসক

Comments

নড়াইল জেলা সদর হাসপাতালে আকস্মিক সফরে গিয়ে চিকিৎসকদের দেখা না পাওয়ায় চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় দলে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

চিকিৎসকরা হলেন- নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. আখতার হোসেন, কার্ডিওলজির জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. শওকত আলী ও ডা. মো. রবিউল আলম এবং মেডিকেল অফিসার ডা. এ এসএম সায়েম।

এদিকে চার চিকিৎসককে বিনা অনুমতিতে হাসপাতালে অনুপস্থিতির কারণ দর্শানোর নোটিশের পাশাপাশি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তাছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় এই চিকিৎসকদের ওএসডি করা হয়েছে এবং সাত কর্মদিবসের মধ্যে মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

এমপি মাশরাফি ঐ হাসপাতালে তদারকি করতে গেলে ডাক্তারদের কর্মস্থলে না পেয়ে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ সময় মাশরাফি জেলা সার্জনের সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন।

মাশরাফি মুঠোফোনের মাধ্যমে সার্জনকে বলেন, “এসব কথা বললে তো হবে না। আপনি চার্জ দিয়ে চলে গেছেন এটা কেমন কথা? আরে বাবা আপনি তো আজকেই প্রথম তত্ত্বাবধায়ক হননি। আপনি কালকে এখানে যোগ দিছেন সেটা বিষয় না। কালকে যোগ দিছেন বলে আজকে রুগী মারা যাইতে না পারে এ রকম তো গ্যারান্টি নাই। আচ্ছা এখানে এখন একজন মানুষও নাই, কয়েকজন নার্স আছে। আপনার এখানে নার্সিং সুপারভাইজার যেটা থাকার কথা সেটাও অ্যাবসেন্ট। আপনি বাসায় গেছেন কেন স্যার, আপনি সেটা আমাকে বুঝাই বলেন। আপনার থাকার কথা নড়াইলে। আজকে যদি এই হসপিটালে কোনো একটা পেশেন্টের সার্জারি প্রয়োজন হয়, আপনি কি সুন্দর বলতেছেন রবিবারে আসেন, আমি রবিবারে সার্জারি করব! তা এই দুদিন আপনার জন্যে পেশেন্ট পড়ে থাকবে? এখন আপনি বলেন, আপনার কী করব, বলেন? বলেন আপনিই বলেন, আপনারে আমি কী করব বলেন? কী হল কথা বলেন না কেন? আপনি ফাইজলামি শুরু করছেন? আজকে যদি একটা পেশেন্টের প্রয়োজন হয় সার্জারি করার কাকে দিয়ে সার্জারি করাবে? আপনি কি এটা ভাবেননি একবারও?”

পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মাশরাফি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর, সিভিল সার্জন ডা. আসাদ-উজ-জামানমুন্সি, হাসপাতালের আরএমও ডা. মশিউর রহমান বাবু উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বেশ কয়েকটি ব্যাপারে কড়া হুঁশিয়ারি দেন মাশরাফি।

  • যেসব চিকিৎসক হাসপাতালে সময়মতো আসনে না এবং অনুপস্থিত থাকেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • হাসপাতালে প্যাথলজিক্যাল সেবা যতটা দেওয়া সম্ভব তার সবটুকু যেন সাধারণ রোগী পান।
  • সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসকদের হাসপাতালে অবস্থান করতে হবে।
  • হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স বাদে প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের ভিতরে থাকতে পারবে না।
  • কোনো দালাল চক্র হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবে না।
  • সব রোগী যাতে সরকারি ওষুধ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
  •  বড় ওয়ার্ডে দুজন করে নার্স দিতে হবে।
  • জরুরি প্রয়োজনে হাসপাতালের জেনারেটর চালু রাখতে হবে।

বাঙালীয়ানা/জেএইচ

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.