২৩ জুন, ১৯৭১

Comments
২৩ জুন ১৯৭১ বুধবার
কি ঘটেছিল
  • বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ প্রশ্নে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানকে সাহায্যদানকারী কনসোর্টিয়াম কর্তৃক পরবর্তী সাহায্য ও ঋণ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ আশা করে দখলদার সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কনসোর্টিয়াম পাকিস্তানকে সাহায্য প্রদান বন্ধ রাখবেন।’
  • ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এক অনুষ্ঠানে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের নেতা। বাংলাদেশ প্রশ্নে রাজনৈতিক মিমাংসার জন্য অন্য কারও সাথে নয়, তাঁর সাথেই আলোচনা করা উচিত। ইন্দিরা গান্ধী এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনা করার জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহ্বান জানান।
  • চট্টগ্রামে হিয়াকুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাকবাহিনীর খাদ্যবাহী একটি ছোট কনভয়কে অ্যামবুশ করে। এ আক্রমণে পাকবাহিনীর একজন সামরিক অফিসার ও তিনজন সৈন্য নিহত এবং দুইজন আহত হয়।
  • রংপুরে লালমনিরহাটে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের একটি শিবিরের ওপর আচমকা আক্রমণ চালিয়ে কিছু অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদসহ একটি ট্রাক দখল করে। এই আক্রমণে একজন পাক অফিসারসহ বেশ কয়েকজন পাকসৈন্য আহত হয়।
  • এদিন মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাকসেনাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট করে দেয়ার জন্য নোয়াখালীর সাহেবজাদা ব্রিজ, চন্দ্রগঞ্জ এবং রামগঞ্জ জেলা কাউন্সিল ব্রিজ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়।
  • একদল মুক্তিযোদ্ধা রাজাপুর ব্রীজ মেরামতকারী দলের উপর অ্যামবুশ করে। এতে ২/৩ জন সাধারণ নাগরিকসহ ২৭ জন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়।
  • কুমিল্লার পাকসেনাদের চতুর্দিক থেকে অ্যামবুশ করার জন্যে চতুর্থ বেঙ্গলের ‘ডি’ কোম্পানির তিনটি প্লাটুন ইয়াকুবপুর, কুয়াপাইনা এবং খৈনলে অবস্থান নেয়। পাকবাহিনীর একটি টহলদার দল মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের কাছাকাছি এলে মুক্তিযোদ্ধারা তুমুল আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে ৮ জন পাকসেনা নিহত ও ৩ জন আহত হয়।
  • কুমিল্লায় আপানিয়াপুল এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা নায়েক সুবেদার শামসুল হক ও হাবিলদার মন্তাজ কয়েকজন দালালসহ দুজন পাকসেনার ওপর আক্রমণ চালায়। এতে পাকসেনা দুজন নিহত হয় ও দালালরা পালিয়ে যায়।
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ আর মল্লিক কলকাতায় স্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের এক সমাবেশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নৈতিক সমর্থন দানের জন্য ভারতীয় জনগণ ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এই সাহায্য সহযোগিতা চির ভাস্বর হয়ে থাকবে।’
  • যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যালেক ডগলাস হিউম কমন্স সভায় বলেন, পাকিস্তানে পুরো প্রকল্পগুলোর জন্য বৃটিশ অনুদান অব্যাহত থাকবে তবে সেখানে কোনো রাজনৈতিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে সাহায্য দান বন্ধ থাকবে।
  • পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো কোয়েটার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য পিপলস পার্টি, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে কতিপয় সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রস্তাব পেশ করেছে।
  • পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির সহ-সভাপতি মাহমুদ আলী পাকিস্তান সরকারের বিশেষ দূত হিসেবে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করার উদ্দেশ্যে মাসব্যাপী বিদেশ সফর শুরু করেন।

বাঙালীয়ানা/এসএল

অগ্নিঝরা একাত্তরের দিনগুলো, পড়ুন –

জুন ১৯৭১

মে ১৯৭১

এপ্রিল ১৯৭১

মার্চ ১৯৭১

মন্তব্য করুন (Comments)

comments

Share.