৩০ মার্চ ১৯৭১ এ কি ঘটেছিল
রাতে ঢাকায় গোলাগুলি শব্দ খুব একটা শোনা যায়নি।
সকালে সরকারী প্রেস ট্রাষ্টের মালিকানাধীন The Morning News এক পৃষ্ঠায় খবর ছেপে আরেক পৃষ্ঠা সাদা রেখেই প্রকাশ পায়।
সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কার্ফিউ তুলে নেয়া হয়।
শহর ছেড়ে মানুষের গ্রামে ছোটা থামেনি। ডেমরা আর কেরানীগঞ্জের পথে লাখো মানুষ ঢাকা ছেড়ে যায় ৩ দিনে।
দ্বিতীয়দিনের মত কেরানীগঞ্জ এলাকায় বিছিন্নভাবে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি বিনিময় চলতে থাকে।
এদিন তাজউদ্দীন আহমদ ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলামকে সঙ্গী করে কুষ্টিয়া জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী টুঙ্গি গ্রামের এক সেতুর নিচে আশ্রয় নেন। এখানে বসেই তাজউদ্দীন আহমদ সিদ্ধান্ত নেন যে তারা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতিনিধি রূপেই ভারতে প্রবেশ করবেন।
পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিকামী নিরস্ত্র জনগণের উপর পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করে বিবৃতি দেন।
বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী রংপুর সেনানিবাসের আশেপাশের এলাকায় হামলা করে লুটপাট, অগ্নি সংযোগ করে এবং ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে।
স্বাধীন বাংলা বেতারের দুপুরের অধিবেশন শেষ হবার পরে পাকিস্তানী বিমান বাহিনীর বিমান বোমাবর্ষণ ক’রে কালুরঘাট বেতার ট্রান্সমিশন এন্টেনাসহ ভবনের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।
এদিকে চট্টগ্রাম মুখ্যত পাকসেনা দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। নৌবাহিনীর গোলাবর্ষণও চলতে থাকে। রাতে কার্যত চট্টগ্রাম শহর হানাদার বাহিনীর দখলে চলে আসে।
সন্ধ্যায় কমান্ডার মতিন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে মুক্তীযোদ্ধারা কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন দখল করে নেয়।
বাঙালীয়ানা/এসএল