৩১ মার্চ ১৯৭১ এ কি ঘটেছিল
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নৃশংসতা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে লক্ষাধিক শরণার্থী বিভিন্ন পথে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে এদিন মেহেরপুর সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেন। সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মহাপরিদর্শক গোলক মজুমদার তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে গার্ড অব অনার দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিনিধির মর্যাদায় গ্রহণ করে।
ঢাকায় কার্ফিউ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শিথিল রয়েছে আগেরদিনের মতো।
ডেমরা আর কেরানীগঞ্জের পথে শহর ছেড়ে গ্রামে ছোটা মানুষের ঢল থামেনি। ৪ দিন ধরে কল্যাণপুর ব্রিজে অবাঙালীদের নৃশংস তৎপরতা কমেনি বরং বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ধরে এনেও এখানে জবাই এবং গুলি করে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দেয়া হচ্ছে ।
কুষ্টিয়ার স্থানীয় জিলা স্কুল প্রাঙ্গণ, ওয়ারলেস কলোনী আর পুলিশ প্রাঙ্গণে উপস্থিত ইপিআর, পুলিশ ও জনতা বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে পাকিস্তানি বাহিনীর ডেল্টা কোম্পানির সৈন্যদের অবস্থানে হামলা চালায়। ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে উদ্বেল জনতার সমুদ্র আর অব্যাহত গুলিবর্ষণ ডেল্টা কোম্পানীর প্রতিরোধ অল্প সময়েই ভেঙে দেয়।
সকাল ৭টায় হালিশহরের কাঁচা সড়ক জংশনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড আর্টিলারি, ট্যাংকসহ ইপিআর বূহ্য ভেদ করে হালিশহরের দিকে অগ্রসর হয়। এ সংঘর্ষে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে বেশ কিছু ইপিআর সদস্য শহীদ হন। বেলা ২টো নাগাদ চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দপ্তর, হালিশহরের পতন ঘটে।
বিমান হামলার পর এদিন স্বাধীন বাংলা বেতারের কর্মীরা কালুরঘাট ট্রান্সমিটার ভবনের এক কিলোওয়াট মোবাইল ট্রান্সমিটারটি তুলে ট্রাকে করে কালুরঘাট ত্যাগ করেন।
এদিনে আরো দুটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ পায়। একটি সরকারী প্রেস ট্রাষ্টের মালিকানাধীন দৈনিক পাকিস্তান ও অপরটি ব্যক্তিমালিকানাধীন দৈনিক পূর্বদেশ। প্রতিটি পত্রিকা প্রকাশিত ৪ পৃষ্ঠার কাগজে কেবলই পাকিস্তান সরকার, পেসিডেন্ট ইয়াহিয়া, ভুট্টো আর সেনাবাহিনীর স্তুতি সংবাদ প্রকাশ করে।
বাঙালীয়ানা/এসএল